কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়া নৌকার ১০ আরোহীর লাশ দুই দিনে উদ্ধার হয়েছে, এখনো নিখোঁজ রয়েছেন দুজন।
Published : 31 Jul 2014, 08:46 AM
ঈদের দিন মঙ্গলবার বিকালে আনন্দ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ভাসানো এই নৌকার এত যাত্রীর একসঙ্গে মৃত্যুতে পদ্মাপাড়ে চলছে স্বজনদের মাতম।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ১৯ জন আরোহী নিয়ে ইঞ্জিনচালিত ছোট ওই নৌকাটি বৈরাগীর চর ঘাট থেকে নদীর মধ্যবর্তী একটি চরে যাচ্ছিল। কিছু দূর যাওয়ার পর প্রবল ঢেউয়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
ওই সময় স্থানীয়রা সাতজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করলেও বাকিরা প্রবল স্রোতে ভেসে যায়। ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন নদীতে তল্লাশি শুরু করে, পরে যোগ দেয় দমকল বাহিনীর ডুবুরিসহ উদ্ধারকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত ১০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন জানিয়েছেন, মৃতদেহ দাফনের জন্য প্রতি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে।
গঙ্গারামপুর গ্রামের তাজুর মেয়ে তিন্নি (৬) এবং একই ঘটনায় নিহত পলির মেয়ে কেয়ামনির (৮) কোনো সন্ধান এখনো মেলেনি। তাদের স্বজনরা এখনো পদ্মা তীরে অপেক্ষায় রয়েছেন।
নৌকাডুবির প্রায় ২৬ ঘণ্টা পর বুধবার সন্ধ্যায় দৌলতপুর উপজেলার মশাউড়া গ্রামের কাজলের স্ত্রী মালা আক্তার পলির (২২)লাশ কুমারখালী উপজেলার এনায়েতপুর এলাকায় পদ্মার প্রধান শাখা গড়াই নদীতে ভেসে ওঠে।
এরা হলেন- রাজশাহী প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের শেষ বর্ষের ছাত্রী ফারাকপুর গ্রামের আবু বক্করের মেয়ে বিভা (২২), একই গ্রামের মরজেম আলীর ছেলে শাহাজুল (২৮), তুফানের ছেলে স্বপন (২০), মওলার ছেলে শিপন (২৬), ইমারুলের ছেলে ইমরান (২০), একই গ্রামের বাবুর দুই মেয়ে বিথী (১০) ও সুবর্ণা (৬), বৈরাগীরচর গ্রামের জামালের ছেলে কালু (১২) এবং একই গ্রামের একরামুল হকের মেয়ে শিখার (১৮) মৃতদেহ।
ওই নৌকার মাঝি সেন্টুকে বুধবার আটক করে দৌলতপুর থানা পুলিশ। নৌকাটি ডুবে যাওয়ার পর স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি কূলে উঠে এসেছিলেন।
খুলনা থেকে আসা আট সদস্যের ডুবুরি দল ভেড়ামারার রায়টা থেকে হার্ডিঞ্জ সেতু এলাকায় তল্লাশি চালালেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নৌকাটির সন্ধান পাননি বলে ডুবুরি দলের নেতা কাজী নাদির হোসেন জানান।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, স্থানীয়রা প্রথমেই শিশুসহ যে কয়েকজনকে উদ্ধার করেন, তাদের মধ্যে চারজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।