বাবা-মা হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ‘পলাতক’ ঐশী পুলিশের কাছে ধরা দিয়েছেন।
Published : 17 Aug 2013, 02:41 PM
মাহফুজুর রহমান ও স্বপ্না বেগমের একমাত্র মেয়ে শনিবার দুপুরে নিজেই পল্টন থানায় যান বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তারপর তাকে পুলিশের একটি গাড়িতে তুলতে দেখেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অপরাধ বিষয়ক প্রধান প্রতিবেদক লিটন হায়দার।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুপুরে পল্টন থানায় এসে ঐশী ডিউটি অফিসারের কাছে গিয়ে তার পরিচয় দেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ওসির কক্ষে নেয়া হয়।
“ওসি এরপর তাকে নিয়ে যান কাছেই মতিঝিল জোনের উপকমিশনারের অফিসে।”
সেখান থেকে ঐশীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে। পরে তাকে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযানে নেমেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঐশী এখন আমাদের হেফাজতে রয়েছে।”
শুক্রবার রাজধানীর চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজ ও তার স্ত্রী স্বপ্নার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধারের পর থেকে ঐশীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
ঐশীকে খুঁজে পেলে হত্যাকাণ্ডের কূলকিনারা পাওয়া যাবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা বলে আসছিলেন।
মাহফুজের দুই সন্তানের মধ্যে বড় ঐশী একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী।
বৃহস্পতিবার সকালে ঐশী সাত বছর বয়সী ছোট ভাই ঐহী ও গৃহকর্মী সুমিকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় বলে ওই বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন।
শুক্রবার সকালে একটি রিকশায় করে ঐহীকে এক আত্মীয়ের বাসায় পাঠানো হয়।
এর আগে টেলিফোনে স্বজনদের সঙ্গে ঐশীর কথাবার্তা সন্দেহজনক বলে পুলিশের কাছে মনে হয়েছে।
ঐশী থানায় এসেছেন একাই, গৃহকর্মী সুমিকেও আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) রাজনৈতিক শাখায় কর্মরত মাহফুজ স্ত্রী স্বপ্না এবং দুই ছেলে-মেয়ে ও এক শিশু গৃহকর্মীকে নিয়ে চামেলীবাগের ওই বাড়ির পঞ্চম তলায় থাকতেন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মাহফুজের ভাই মশিউর রহমান বাদী হয়ে শনিবার মতিঝিল থানায় মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মাহফুজ ও স্বপ্না দম্পতির লাশের ময়না তদন্ত হয়।
ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপেশাদার ব্যক্তিদের ছুরির আঘাতে মাহফুজ ও তার স্ত্রী মারা গেছেন। নিহত পুলিশ কর্মকর্তার দেহে ছুরিকাঘাতের দুটি এবং তার স্ত্রীর দেহে ১১টি চিহ্ন রয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডে একাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিলেন বলেও ধারণা করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ।
তিনি বলেন, “কমপক্ষে দুই থেকে ততোধিক ব্যক্তি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
“এতগুলো স্ট্যাব করা হয়েছে, তাতে মনে হয় অপেশাদার কেউ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।”
এসবির উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া শুক্রবার বলেছিলেন, “আক্রোশ থেকে পরিকল্পিতভাবে দুজনকে খুন করা হয়েছে। চার থেকে পাঁচ জন এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।”