কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের প্রথম দিন সোমবার ঢাকার তিনটি হাসপাতালে ৩৬০ জনকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
Published : 20 Jun 2021, 05:33 PM
টিকাগ্রহীতাদের পর্যবেক্ষণ শেষে ৭ থেকে ১০ দিন পর অন্যদের এই টিকা দেওয়ার কর্মসূচী শুরুর পরিকল্পনা অধিদপ্তরের।
রোববার অধিদপ্তরের বুলেটিনে এসব তথ্য জানিয়েছেন এমএনসিঅ্যান্ডএইচের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো.শামসুল হক।
তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৩৬০ জনকে প্রথমে এই টিকা দেওয়া হবে।
সোমবার ফাইজারের টিকা প্রয়োগ হলে তা হবে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবহার হওয়া তৃতীয় টিকা।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়ার মাধ্যমে দেশে কোভিডের টিকার প্রথম পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়।
পরে ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান কর্মসূচীর আওতায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাদান শুরু হয়।
এই টিকার মজুদ ফুরিয়ে এলে দ্বিতীয় টিকা হিসেবে দেশে দেওয়া হচ্ছে চীনের সিনোফার্মের টিকা। ২৫ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী অনন্যা সালাম সমতাকে দিয়ে এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়।
শনিবার থেকে দেশের ৬৭টি কেন্দ্রে সিনোফার্মের টিকার গণপ্রয়োগ শুরু হয়েছে।
চীনের উপহার হিসেবে পাঠানো ১১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা ১২ মে এবং ১৩ জুনের দুই চালানে বাংলাদেশে পৌঁছায়।
বাংলাদেশে তৃতীয় টিকার চালান হিসেবে টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেকের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজের চালান এসে পৌঁছায় গত ৩১ মে।
এতদিন এই টিকা রাখা হয়েছে আল্ট্রা কোল্ড চেইনের মাধ্যমে।
রোববার সংবাদ বুলেটিনে ডা. শামসুল বলেন, এই টিকা দেওয়ার জন্য গাইডলাইন তৈরি এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া শেষ হয়েছে।
প্রথম টিকাগ্রহীতাদের পর্যবেক্ষণের ৭ থেকে ১০ দিন পর সেকেন্ড রান বা নিয়মিত কর্মসূচী চালুর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “তখন টিকাদান কার্যক্রম আরও বর্ধিত করতে পারব। আমরা আশা করি যে ঢাকায় আরও কয়েকটি কেন্দ্র চালু হবে।”
ডা. শামসুল জানান, যারা এই তিনটি কেন্দ্রে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছিলেন তারাই টিকা পাবেন।
“নিবন্ধন করেছেন কিন্তু টিকা পাননি, নিতে পারেন নাই অথবা নেওয়ার জন্য আসেন নাই- তারা কাল যদি আসেন তাহলে টিকা নিতে পারবেন। টিকাদান শুরুর হবে সকাল নয়টা থেকে, চলবে বেলা তিনটা পর্যন্ত। এই তিনটি হাসপাতালের প্রতিটিকে গড়ে ১২০ জনকে টিকা দেওয়া হবে।”
দেশে ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে।
প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ৩ কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তির পর দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া যায়।
এরপর ভারত সরকার রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশ বেকায়দায় পড়ে। ফলে টিকাদান কর্মসূচিতে প্রথম ডোজ দেওয়া ২৫ এপ্রিল থেকে বন্ধ করে দিতে হয়।
এখন শুধু দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হলেও তাও ফুরিয়ে গেছে প্রায়। প্রায় ১৫ লাখ মানুষ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ সময়মতো পাবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি।