‘ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও’ নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় রাফিদা আহমেদ বন্যা স্বামী অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে আসছেন না বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার জাকির জানিয়েছেন।
Published : 22 Dec 2020, 06:08 PM
মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে এই মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেওয়ার পর একথা বলেন তিনি।
জবাবে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাকে যথাযথ পদ্ধতিতে দূতাবাসের মাধ্যমে আদালতের সমন পাঠানো হয়েছিল। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার সঙ্গে টেলিফোনে কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি বলেছেন, সাক্ষ্য দেওয়ার আমার শতভাগ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আসতে পারছি না।”
বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন যুক্তরাষ্ট্রে। ২০১৫ সালে বইমেলা উপলক্ষে দেশে ফিরেছিলেন দুজন।
২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা পৌঁছানোর পর রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন তারা।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন অভিজিতের বাবা প্রয়াত অধ্যাপক অজয় রায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মারা যাওয়ার আগে শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন অজয় রায়।
এ মামলায় ২৬ জনের সাক্ষ্য হয়েছে জানিয়ে আইনজীবী জাকির বলছেন, আর বেশি সাক্ষ্য ‘দরকার নেই’। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই আলোচিত এই মামলার রায় হতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।
এদিন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের কাছে মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সুব্রত গোলদার সাক্ষ্য দেন।
তদন্তকালে সুব্রত গোলদার নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন, জব্দ তালিকা, মানচিত্র, সূচিপত্র এবং ১৬১ ধারায় কয়েকজন সাক্ষীর জবানদন্দি নিয়েছিলেন। এ বিষয়গুলো সমথর্ন করে আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি।
পরে তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মোসলেহ উদ্দিন জসীম, খায়রুল ইসলাম লিটন ও আরও দুইজন আইনজীবী।
এই মামলায় ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ আদালতে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযাগপত্র জমা দেন মামলার সে সময়ের তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম। মামলায় ৩৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।
ওই বছরের ১১ এপ্রিল ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নেয়। পরে গত বছরের ১ অগাস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন তিনি।
মামলার আসামিরা হলেন চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আকরাম হোসেন ওরফে আবির, মো. আরাফাত রহমান ও শফিউর রহমান ফারাবি।
আসামিদের মধ্যে প্রথম দুজন পলাতক আছেন।