করোনাভাইরাস মহামারীতে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে পরীক্ষায় বসতে চান না দেশের মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় সেশনজট দূর ও যথাসময়ে কোর্স শেষ করতে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে পরবর্তী ধাপের ক্লাস অনলাইনে শুরুর দাবি জানিয়েছেন তারা।
Published : 01 Nov 2020, 03:17 PM
দাবি আদায়ে রোববার সাড়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী। এসময় শাহবাগ মোড়ের চারপাশের রাস্তায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে দুপুর ২টায় তারা অবরোধ তুলে নেন।
এর আগে সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ঘুরে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, যখন পরিস্থিতি মহামারীর সেকেন্ড ওয়েভের দিকে যাচ্ছে, তখন পরীক্ষায় বসলে সংক্রমিত হওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুঝুঁকিও তৈরি হবে। এ অবস্থায় সেশনজট নিরসন ও যথাসময়ে কোর্স সম্পন্ন করতে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে পরবর্তী ধাপের ক্লাস অনলাইনে শুরু করা হোক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা পরীক্ষায় বসবেন।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমডিএসএ) সভাপতি সুরুজ ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোডিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অন্যান্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যায়, দেশের সকল মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে।
“এখন আমরা করোনাভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু সম্প্রতি স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের দ্বিতীয় ও তৃতীয় এবং পর্যায়ক্রম প্রথম ও শেষ বার বৃত্তিমূলক পরীক্ষা নেওয়ার নোটিস জারি করেছে। আমাদের কার্যক্রম সচল রাখার জন্য পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও তা আমাদের জন্য হুমকি স্বরূপ হতে পারে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা আমাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে চরম অনিশ্চিয়তা ও দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। ইতিমধ্যেই প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষা সময়মত না হওয়ায় আট মাস পিছিয়ে ভয়ানক এক সেশনজটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এমবিবিএস বা বিডিএস শিক্ষাব্যবস্থা একটি দীর্ঘমেয়াদী কোর্স । উপরন্তু কোভিড-১৯ পরিস্থিতির জন্য আমরা আরও পিছিয়ে যাচ্ছি।ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
“এছাড়া প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোতে ক্লাস ও হোস্টেল বন্ধ থাকার পরও অতিরিক্ত বেতন পরিশোধের জন্য বিভিন্ন উপায়ে প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে, যা প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এটা বিএমডিসির নীতিমালা বহির্ভূত। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব সমস্যা নিয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই সরকার, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালযের কাছে দাবি, এসব সমস্যা সমাধান করে আমাদের শিক্ষাজীবনকে সেশনজটের হাত থেকে রক্ষা করুন।”