ঢাকার মশা ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠায় প্রচলিত ওষুধের মাত্রা দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।
Published : 15 Jul 2019, 08:31 PM
সোমবার গুলশানে ডিএনসিসির নগর ভবনে মেয়র আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ‘মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ব্যবহৃত অধিকতর কার্যকর কীটনাশক প্রবর্তন’ শীর্ষক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মেয়র আতিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নতুন ওষুধ না আসা পর্যন্ত আপাতত বর্তমান ওষুধ মাত্রা বাড়িয়ে ব্যবহার করবেন তারা।
“সভায় বিশেষজ্ঞরা পরবর্তী কীটনাশক না কেনা পর্যন্ত বর্তমানে ব্যবহৃত কীটনাশকের ঘনত্ব বাড়িয়ে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন।”
ডেঙ্গুর বিস্তারে নাগরিকদের ক্ষোভ ও আদালতের উষ্মা প্রকাশের প্রেক্ষাপটে মশা নিধনে কার্যকর কীটনাশক ও নতুন প্রযুক্তি সংযোজনের সিদ্ধান্তও সভায় হয়।
মেয়র বলেন, “তবে দীর্ঘমেয়াদী কীটনাশক কেনার আগ পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদে অধিকতর কার্যকর কীটনাশক কেনার ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শের অনুযায়ী নতুন কীটনাশক সংযোজন করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।”
মশার ওষুধ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, “সবকিছু মিলিয়ে আমাদের বৈঠক অত্যন্ত ফ্রুটফুল হয়েছে। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এর একটা সমাধান আনার চেষ্টা করছি। আশা করছি, খুব দ্রুতই ব্যবস্থা নিতে পারব।”
বর্তমানে পূর্ণ বয়স্ক মশা নিধনে প্রতি এক লিটার কেরোসিনের সঙ্গে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ পারমেথ্রিন, শূন্য দশমিক দুই শতাংশ টেট্রামেথ্রিন এবং শূন্য দশমিক এক শতাংশ এস বায়ো অ্যালাথ্রিন মিশিয়ে ফগার মেশিন দিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
সিটি করপোরেশন ১০ বছর ধরে কীটনাশকের এই মাত্রা ব্যবহার করে আসছে। এই ওষুধে এখন পূর্ণ বয়স্ক মশা মরছে না বলে আইসিডিডিআর,বির একটি গবেষণায় উঠে আসে।
তিন বার পরীক্ষার পরও মশা না মারা যাওয়ার ঘটনায় গত সপ্তাহে ওষুধ সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করে ডিএনসিসি।
মশা নিয়ন্ত্রণে কীটনাশক নির্বাচন, কার্যকারিতা পরীক্ষা, ক্রয় প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা এবং কীটনাশকের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণে ১০ সদস্যের কারিগরি কমিটিও গঠন করা হয়েছে সোমবারের সভায়।
ডিএনসিসির মেয়রকে সভাপতি, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ বা সিডিসি, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা আইইডিসিআর, আইসিডিডিআর,বির প্রতিনিধি, সিডিসির কীটতত্ত্ববিদ, উদ্ভিদ সংরক্ষণ শাখার প্রতিনিধি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার, বাংলাদেশ ক্রপ প্রটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম আজাদ ও কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন।
সভায় লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, সিডিসির পরিচালক অধ্যাপক সামিয়া তাহমিনা, আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, উদ্ভিদ সংরক্ষণ শাখার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. মোশারফ হোসেন, আইসিডিডিআর,বির সহযোগী বিজ্ঞানী ড. মো. শফিউল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার, ম্যালেরিয়া অ্যান্ড এডিস ট্রান্সমিটেড ডিজিজেজ-এর ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এম এম আক্তারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।