বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাজউদ্দীন আহমদের ভূমিকা স্মরণ করে ইতিহাসের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু জাতির জনক, কিন্তু তার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। তাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস লেখা যাবে না।
Published : 08 Nov 2018, 11:19 PM
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘তাজউদ্দীন আহমদ: এক তরুণের রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতায় এভাবে তাজউদ্দীনের মূল্যায়ন করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের নামে গড়ে ওঠা 'তাজউদ্দীন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড' এই বক্তৃতার আয়োজন করে।
অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন তাজউদ্দীন আহমদের দেশপ্রেম ও ভাবনা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও নেতৃত্বের যোগ্যতা, তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “তাজউদ্দীন আহমদ ইতিহাসের গতিপথকে সচেতনভাবে অনুসরণ করে ইতিহাসের সঙ্গে গেছেন। যিনি ইতিহাসের সঙ্গে যান তাকে কখনও বর্জন করা যায় না। আমরা তাকে বর্জনের চেষ্টা করতে পারি কিন্তু তাকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতার ইতিহাস লেখা যাবে না। বঙ্গবন্ধু জাতির জনক কিন্তু তার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। বর্তমান তাকে উপেক্ষা করতে পারে কিন্তু ভবিষ্যতের পক্ষে তাকে উপক্ষো করা সম্ভব নয়।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে ও সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তাজউদ্দীন আহমদের বড় মেয়ে শারমিন আহমদ।
এ সময় বিএসএস সম্মান শ্রেণিতে সবচেয়ে ভালো ফলের জন্য শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের আফতাব নামের এক শিক্ষার্থীকে শান্তি স্বর্ণপদক ও নওশীন আকন্দ নামে এক শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়। এছাড়াও তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি রচনা প্রতিযোগিতার পাঁচ বিজয়ীকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাস লিখতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই তাজউদ্দীন আহমদের নাম সামনে আসে। কেননা তার জন্মই হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর সাথে রাজনীতি করার জন্য। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন, আর যে ব্যক্তি তার প্রজ্ঞা, মেধা ও বুদ্ধি দিয়ে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিলেন তিনি হলেন তাজউদ্দীন আহমদ। তিনি আজীবন তার আদর্শে অটল ছিলেন। নীতির সঙ্গে কখনো আপস করেননি।”
তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি বলেন, “পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা অসুন্দরকে সুন্দর করে তোলেন। তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন এমনই একজন মানুষ। তিনি তার মেধা দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন।"