নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার আলোকচিত্রী শহিদুল আলম জামিনের আবেদন করেছেন।
Published : 14 Aug 2018, 09:32 PM
শহিদুলের বিরুদ্ধে রমনা থানায় দায়ের করা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের মামলায় মঙ্গলবার জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী জায়েদুর রহমান।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশের আদালতে এ আবেদন করা হয়।
বিচারক পরে জামিন আবেদনের ওপর শুনানির জন্য আগামী ১১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন বলে আইনজীবী জায়েদুর রহমান জানিয়েছেন।
এর আগে গত ১২ অগাস্ট রিমান্ড শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম ফাহাদ বিন আমিন চৌধুরী এই আলোকচিত্রীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুলকে গত ৫ আগস্ট রাতে তার ধানমণ্ডির বাসা থেকে ডিবি আটক করে। তথ্য প্রযুক্তি আইনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরদিন আদালতের মাধ্যমে তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
কিন্তু শহিদুলকে আটকের পর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে আবেদন হলে আদালত ওই রিমান্ড স্থগিত করে। আদালতের আদেশে বিএসএমএমইউতে নেওয়া হলেও তার অবস্থা হাসপাতালে ভর্তির মতো নয় বলে জানায় বিএসএমএমইউ পরিচালক।
এরপর হাই কোর্ট স্বরাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেয় যে শহিদুলকে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছিল কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে। সোমবারের মধ্যে ওই প্রতিবেদন চাওয়া হয় সচিবের কাছে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত ৩ ও ৪ অগাস্ট জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার ফেইসবুক লাইভে এসেছিলেন অধিকারকর্মী শহিদুল। ওই আন্দোলনের বিষয়ে আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সরকারের সমালোচনাও করেন।
শহিদুলের বিরুদ্ধে পুলিশের করা মামলায় ‘কল্পনাপ্রসূত তথ্যের’ মাধ্যমে জনসাধারণের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে ‘মিথ্যা প্রচার’ চালানো, উসকানিমূলক তথ্য উপস্থাপন, সরকারকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ ও অকার্যকর’ হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপস্থাপন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ‘অবনতি ঘটিয়ে’ জনমনে ‘ভীতি ও সন্ত্রাস ছড়িয়ে’ দেওয়ার ষড়যন্ত্র এবং তা বাস্তবায়নে ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ‘অপপ্রচারের’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
৬৩ বছরে শহিদুলকে গ্রেপ্তারের পর বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা উঠেছে। বিদেশে নোয়াম চমস্কি, অরুন্ধতী রায়ের মতো খ্যাতনামা লেখকরাও তার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।