বিএসএমএমইউতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নেওয়ার পর খালেদা জিয়াকে তার পছন্দের চিকিৎসকরা দেখেছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন।
Published : 07 Apr 2018, 04:29 PM
বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক কিছু পরীক্ষার জন্য শনিবার তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পুরনো কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়েছিল, সেই বোর্ড কারাগারে দেখে আসার পর তাকে বিএসএমএমইউতে নেওয়া হয়।
তবে মেডিকেল বোর্ডে থাকা ঢাকা মেডিকেল কলেজের চার চিকিৎসকের কেউ তাকে বিএসএমএমইউতে দেখেননি। অন্য চারজন চিকিৎসক তাকে দেখেন।
ব্রিগেডিয়ার হারুন সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, “উনি (খালেদা জিয়া) তার পছন্দ অনুযায়ী যেসব চিকিৎসকের উপস্থিতি চেয়েছিলেন, তারা ছিলেন।”
এই চিকিৎসকরা হলেন খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক হদরোগ বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ মামুন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এফ এম সিদ্দিকী ও নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াহিদুর রহমান।
বিএসএমএমইউ পরিচালক বলেন, “উনাকে এক্সরে বিভাগে নেওয়ার সময়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তার সঙ্গে ছিলেন। কেবিনে তার চিকিৎসকদের সাথে উনি কথা বলেছেন। সেসময়ে আমিও ছিলাম।”
মোট চারজন চিকিৎসকের উপস্থিতি চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তাদের একজন অ্যাপোলো হাসপাতালের ডা. এম আলী হাসপাতাল ফটকে এলেও ঢুকতে পারেননি বলে জানা গেছে।
যে চারজন চিকিৎসক বিএসএমএমইউতে খালেদাকে দেখেন, তাদের মধ্যে কারাগারের একজন চিকিৎসকও ছিলেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় কারা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, তাতে রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামান, ডা. মনসুর হাবীব (নিউরোলজি), টিটু মিয়া (মেডিসিন) ও সোহেলী রহমান (ফিজিক্যাল মেডিসিন)।
গঠিত মেডিকেল বোর্ড নিয়ে বিএনপি নেতারা অনাস্থা জানিয়ে আসছিলেন। ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে তার চিকিৎসার আহ্বানও জানিয়ে আসছিলেন তারা।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া দণ্ড নিয়ে বন্দি হওয়ার পর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তাকে দেখতে যেতে চাইলেও কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি পায়নি।
‘খালেদা আপাতদৃষ্টিতে ভালো’
৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে ‘আপাতদৃষ্টিতে ভালো’ দেখেছেন বলে জানান বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হারুন।
তিনি বলেন, “উনি (খালেদা জিয়া) কেবিন থেকে হেঁটে রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে এসেছেন। আবার হেঁটে গাড়িতে উঠেছেন। আমরা আপাতদৃষ্টিতে দেখেছি, উনি ভালো আছেন।
“আমরা উনার জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম এবং উনি আমাকে নিজেই বলেছেন, ‘আমি হেঁটে যেতে পারব, আমরা হুইল চেয়ার প্রয়োজন নেই’।”
“তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে তার শারীরিক কোনো অসুবিধা আছে কি না, তা মেডিকেল বোর্ড বলতে পারবে,” বলেন হাসপাতালের পরিচালক।
গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে কিছু পরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিএসএমএমইউতে আনা হয়েছিল, তার মধ্যে শুধু হাঁটু ও হাতের এক্স রে করা হয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার হারুন বলেন, “আমাদের এখানে এসেছিলেন, কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য। আমরা আগে থেকে সমস্ত কিছু প্রস্তুত করে রেখেছিলাম। রেজিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে উনার হাড়ের বিভিন্ন অংশের এক্সরে করা হয়। এই এক্সরে করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিকেল বোর্ড উপদেশ দিয়েছিলেন।”
রোববার এক্স রে প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা কারা কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
খালেদা জিয়া কারাগারে ফেরত যাওয়ার পর বিএসএমএমইউর শহীদ মিলন মিলনায়তনে প্রেস ব্রিফিংয়ে আসা ব্রিগেডিয়ার হারুনের সঙ্গে হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ডা. নাজমুল করীম মানিকও উপস্থিত ছিলেন।