একটি বিড়ালকে দড়িতে বেঁধে ছাদের কার্নিশ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, দড়ির অন্য প্রান্ত ধরে হাস্যোজ্জ্বল কয়েকটি শিশুর ছবি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
Published : 18 Mar 2018, 08:30 PM
‘আওয়ার পিজিয়ন্স ক্লাব' নামের একটি ফেইসবুক গ্রুপে ‘অবশেষে কবুতরের খুনির ফাঁসি কার্যকর’ শিরোনামে রোববার এই ছবি আপলোড করা হয় মো. জাকির হোসেন বাপ্পি নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে।
এই ছবি দেখে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকে। সমাজে শিশুরা মানবিক শিক্ষা পাচ্ছে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে।
ছড়াকার লুৎফর রহমান লিটন লিখেছেন, “খুব অমানবিক হিংস্র একটা প্রজন্ম বেড়ে উঠছে আমাদের সমাজে, আমরা খেয়াল করছি না। আমাদের অজান্তেই মায়া-মমতা-প্রেম আর ভালোবাসাহীন একটা প্রজন্ম চরম নিষ্ঠুরতাকে উপভোগ করতে করতে বিকশিত হচ্ছে, আমরা টের পাচ্ছি না।
“আজ দুপুর থেকেই ভয়ঙ্কর একটা কষ্ট আমাকে স্বাভাবিক হতে দিচ্ছে না। ফেইসবুকে ভেসে ওঠা একটা ছবি দুঃস্বপ্নের মতো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আমাকে।”
দেবরাজ বিশ্বাস লিখেছেন, “নৃশংস হচ্ছে শিশুরা...কবুতর মারার অপরাধে বিড়ালকে দড়িতে ঝুলিয়ে বেশ কজন শিশু উল্লাস করছে! দৃশ্যটি দেখে গা শিউরে উঠল।”
প্রাণীর ওপর শিশুদের এই নৃশংসতার কারণ হিসেবে পরিবার থেকে শিশুদের ‘মূল্যবোধ শিক্ষার’ ঘাটতির কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহফুজা খানম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পশু-পাখিদের কষ্ট দেখে যেখানে শিশুদের কষ্ট পাওয়ার কথা সেখানে তারা মজা পাচ্ছে! যতদিন পরিবার থেকে কোমল বৃত্তি ও মূল্যবোধের চর্চা না শেখানো হবে শিশুদের খারাপ আচরণ বেড়ে চলবে।"
“নয়ত এক সময় দেখা যাবে, মানুষের এমন অবস্থা দেখে তারা মজা পাবে, সহমর্মিতা বোধ করার স্থলে হাসবে।”
দেশে কুকুর-বিড়ালসহ অন্যান্য প্রাণীর উপর নির্যাতন প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন প্রাণী কল্যাণে কাজ করা সংস্থা ‘কেয়ার ফর পজের' সংগঠক সৌরভ শামীম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোথাও কুকুরের চারটি পা কেটে দেওয়া হয়েছে, কোথাও চোখ তুলে নেওয়া হয়েছে কিংবা বাচ্চাসহ জ্যান্ত মাটিতে কবর দেওয়া হয়েছে; প্রতি মাসেই এমন পাঁচ-সাতটি ঘটনা আমাদের কাছে আসে। আমরা গিয়ে প্রাণীটিকে রক্ষা করি এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেই।”