রাজধানীর গুলিস্তান পাতাল মার্কেটে উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে দোকানিদের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।
Published : 27 Oct 2016, 08:27 PM
বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনার পর দোকানিরা সড়ক অবরোধ করলে গুলিস্তান এলাকায় কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এই ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারীদের অন্যতম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী হাকিম মো. আবু সাঈদ।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা হঠাৎ করে ঘটে গেছে।”
পুলিশ অবরোধকারীদের তুলে দেওয়ার পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন সেখানে যান।
ফুটপাত চলাচল উপযোগী রাখতে প্রতিদিন উচ্ছেদ অভিযান চালানোর ঘোষণা দেন তিনি। রাস্তা দখল করার চেষ্টা কঠোরভাবে দমনের হুঁশিয়ারিও তিনি দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুপুর ১টার দিকে গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু স্কয়ার পাতাল মার্কেটে অভিযানে যান সিটি করপোরশেনের কর্মকর্তারা।
অভিযানে সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. খালিদ আহমেদের সঙ্গে ছিলেন নির্বাহী হাকিম আবু সাঈদ ও মামুনুর রশীদ।
পাতাল মার্কেটে ফুটপাত ও মানুষের হাঁটার জায়গা দখল করে দোকান করায় কয়েকজনকে জরিমানা করেন তারা।
অভিযান চলার সময় গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু স্কয়ার পাতাল মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন তাদের কাজে বাধা দেন বলে অভিযোগ আবু সাঈদের।
সমিতির নেতা আনোয়ারকে নগর ভবনে নিয়ে যাওয়ার পর দোকানিরা সড়ক অবরোধ করেন।
রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার খবর শুনে পুলিশ সেখানে যায় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. মোজাহারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
তিনি বলেন, “আমরা সেখানে গিয়ে দেখি পাতাল মার্কেটের দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে রাস্তার ব্যারিকেড তুলে দিয়েছি। পরে রাস্তা ছেড়ে দিয়ে তারা সিটি করপোরেশনের দিকে চলে যায়। এরপর কী হয়েছে বলতে পারব না।”
দোকানিরা নগর ভবনের সামনে গিয়ে মিছিল শুরু করেন। সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা ধাওয়া দিলে তারা গুলিস্তানে ফিরে আসেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।
এরপর দুপুর ৩টার দিকে সিটি করপোরেশনের বুলডোজার নিয়ে আবার অভিযানে যান নির্বাহী হাকিম। তারা ফুটপাতের দোকান উচ্ছেদ শুরু করেন।
উচ্ছেদ অভিযান শেষে সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এলাকা গুলশানের ফুটপাত দখলমুক্ত করতে প্রতিদিন উচ্ছেদ অভিযান চলবে।
“হকাররা পথ আটকে রাখায় রোগীদের গাড়ি চলাচল, শিশুদের স্কুলে যাতায়াতসহ পথচারীদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এ সড়ক চলাচল উপযোগী রাখতে যা যা করা দরকার সব করা হবে।”
নাগরিকদের অসুবিধা করে কেউ রাস্তা দখল করতে চাইলে তাকে কঠোরভাবে দমন করা হবে, বলেন মেয়র।
এদিকে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর সন্ধ্যায় দোকান মালিক সমিতির নেতারা নগর ভবনে গিয়ে অঙ্গীকারনামা দিয়ে আনোয়ারকে ছাড়িয়ে আনেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আনোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, “আমি অফিসে বসে সিসি ক্যামেরায় দেখছিলাম যে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করছে। আমি সেখানে গিয়ে অনুরোধ করলাম ঢালাওভাবে জরিমানা না করতে।
“এক কথা-দুই কথায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পরে আমাকে গ্রেপ্তার করে নগর ভবনে নিয়ে গেলে লোকজন রাস্তায় নেমে যায়।”