সংকটে পড়া বান্দরবানের থানচি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে আরও তিন মাস খাদ্যসহায়তা চালু রাখার দাবি জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক।
Published : 30 Jun 2016, 06:57 PM
বৃহস্পতিবার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে সেখানকার খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান প্রতিষ্ঠানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির পরিচালক গওহার নঈম ওয়ারা।
তিনি বলেন, আমাদের হিসাব মতে থানচি উপজেলায় খাদ্যস্বল্পতায় ভুগছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এ খাদ্য সমস্যা সমাধানে আগামী তিনমাস সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে শিশুদের বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে।
ওই এলাকায় সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়েরও সুপারিশ আসে গওহার নঈমের কাছ থেকে।
গত এক মাসে দুই দফায় ১০ দিন ব্র্যাকের ১৬ জন কর্মকর্তার পরিদর্শনের আলোকে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
প্রতিবেদনে দীর্ঘমেয়াদে খাদ্যসমস্যা সমাধানে সরকারি চাল সহায়তার পাশাপাশি নগদ অর্থায়নের পাশাপাশি অধিবাসীদের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা, পাহাড়িদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণের জন্য স্থানীয় বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ম্যালেরিয়া রোগীদের জন্য সহজলভ্য চিকিৎসা ও রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার সুপারিশ করা হয়।
তিনি বলেন, “আমরা স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্তরে কথা বলে জেনেছি, খাদ্য সংকটের মূল কারণ হচ্ছে প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক এবং প্রক্রিয়াগত সীমাবদ্ধতা।
“বিশেষত ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাব ও অসময়ে বৃষ্টির কারণে জুম চাষ সফল না হওয়া এবং উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত খরচের কারণে বাজারজাত করতে না পারায় তারা এ সংকটে পড়ে।”
পাশাপাশি প্রক্রিয়াগত সীমাবদ্ধতা হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকা, সাঙ্গু নদীতে পানিপ্রবাহ কমে যাতায়াতে সমস্যা সৃষ্টি এবং ডব্লিউএফপির খাদ্যসাহায্য বন্ধ সম্পর্কে অজ্ঞাত থাকাকে চিহ্নিত করেন ব্র্যাকের পরিচালক।
এ সময় ব্র্যাকের পরিচালক কে এ এম মোর্শেদ বলেন, “সরকারের চাল বিতরণকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু আক্রান্ত এলাকার অধিকাংশেরই ভোটার আইডি কার্ড না থাকায় তারা চাল পাচ্ছেন না।”
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী রাজুময় তঞ্চংগ্যা বলেন, খাদ্যসংকটের পাশাপাশি থানচির বড় মোদক থেকে লিক্রি পর্যন্ত এলাকায় ম্যালেরিয়ার ব্যাপক প্রকোপ আমরা দেখেছি। কিন্তু সেখানে ম্যালেরিয়া মোকাবেলায় তেমন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।”
অন্যদের মধ্যে থানচির স্থানীয় কমিউনিটি নেতা পিয়াচ্যং মুরং, স্থানীয় প্রতিনিধির পক্ষে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খামলাই মুরং, বান্দরবানের স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা গ্রাউস-এর প্রতিনিধি অপুল ত্রিপুরা ও চিন্ময় মুরুং সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।