প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল সন্ত্রাসী হামলায় আহত প্রকাশক আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুলসহ তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গেলে মুক্তমনা লেখক-প্রকাশক খুন হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেখানে উপস্থিত কয়েকজন।
Published : 31 Oct 2015, 08:30 PM
শনিবার দুপুরে লালমাটিয়ায় প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের অফিসে হামলায় আহতদের দেখতে সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেলে যান শাকিল। এরইমধ্যে শাহবাগে নিজের অফিসে খুন হন আরেক প্রকাশনা সংস্থা জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক ফয়সাল আরেফিন দীপন। দুটি প্রকাশনা সংস্থা থেকেই নিহত বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশিত হয়েছিল।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শাকিল।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আমি আহতদের দেখতে এসেছি। যারা দেশকে অকার্যকর করতে চায় সেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।”
শাকিল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা জলি তালুকদার এবং সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা মঞ্জুর মঈনসহ প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী পাশে ছিলেন।
খুনিদের রুখতে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিগুলোর ঐক্যের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী শাকিল।
“যারা এসব খুন করছে তাদের প্রতিহত করতে হলে স্বাধীনতার পক্ষের সকল শক্তিকে এক হতে হবে।”
তিনি একথা বলার পরপরই মঞ্জুর বলে ওঠেন, “আপনারা কী করছেন? কোনো ঘটনাতেই কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি। আপনারা ব্যর্থ।”
এ সময় সেখানে উপস্থিত অন্যরাও ‘আপনারা ব্যর্থ’ বলে চেঁচিয়ে ওঠেন।
‘লাশ দেখতে এসেছেন’ এ প্রশ্নও ছুড়ে দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর সহকারীর উদ্দেশ্যে।
জবাবে শাকিল বলেন, “লাশ দেখতে আসিনি, চিকিৎসার সহযোগিতায় এসেছি। তাদের নিরাপত্তার জন্য এসেছি।”
তিনি বলেন, “আমাদের মন্ত্রীরাও হুমকি পাচ্ছেন আপনারা জানেন। তাই ভিন্ন ভিন্ন দ্বীপে দাঁড়িয়ে না থেকে আসুন আমরা অভিন্নভাবে লড়ি।
“শেখ হাসিনার অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।”
তিনি লেখেন, “আমাদের প্রকাশক-লেখক টুটুল, তারেক, রণদীপন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অন্ধত্ববাদীদের হামলায় আহত। রক্তের প্রয়োজন।
“একজন নগণ্য সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী হিসাবে ছাত্রলীগের বর্তমান নেতা-কর্মীদের প্রতি বিনীত আবেদন, ওদের রক্ত লাগবে, চিকিৎসা লাগবে। হাত বাড়া্ও। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।”
গত ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় খুন হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী লেখক অভিজিৎ রায়, ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লেখালেখি করতেন তিনি।
অভিজিৎকে হত্যার পর গত সাত মাসে অনলাইন অ্যাকিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু, ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ ও নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় খুন হন।
সর্বশেষ শনিবার অভিজিতের দুই প্রকাশকের উপর হামলায় প্রাণ হারালেন দীপন।