উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ ছাড়ার চিঠি গৃহীত হওয়ার আগে সংসদ সদস্য হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করায় সাতজনের প্রার্থিতা স্থগিত করেছে হাই কোর্ট।
Published : 20 Dec 2018, 09:35 PM
এই সাতজনের পাঁচজন বিএনপির প্রার্থী এবং বাকি দুজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের নয় দিন আগে মঙ্গলবার আলাদা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের অবকাশকালীন হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ প্রার্থিতা বাতিলের আদেশ দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজহীবী শাহ মঞ্জুরুল হক, রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
শাহ মঞ্জুরুল সাংবাদিকদের বলেন, “এ সাত প্রার্থী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগপত্র দাখিল করলেও তাদের পদত্যাগপত্র গৃহিত না হওয়ায় আদালত তাদের মনোনয়নপত্র স্থগিত করে দিয়েছেন।”
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাজু বলেন, হাই কোর্টের আদেশের ফলে এই সাতজন আপাতত নির্বাচন করতে পারছেন না।
কাজল সাংবাদিকদের বলেছেন, হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাবেন তারা।
এই সাতজনের মধ্যে বিএনপির প্রার্থী রয়েছেন রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবু সাঈদ চাঁদ।
জামালপুর-৪ আসনে সরিষাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম। তার বিরুদ্ধে রিট আবেদন করেন ওই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুরাদ হাসান।
জয়পুরহাট-১ (জয়পুরহাট সদর ওপাঁচবিবি) আসনে জয়পুরহাট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান। তার বিরুদ্ধে রিট আবেদন করেন ওই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল আলম।
ঝিনাইদহ-২ আসনের হরিনাকুণ্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মজিদ। তার বিরুদ্ধে রিট আবেদন করেন ওই আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া-কসবা) আসনে আখাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন। তার বিরুদ্ধে রিট আবেদন করেন ওই আসনের ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি জসিম উদ্দিন।
বাকি দুজন হলেন ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমন। যিনি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। ওই আসনের মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম তার বিরুদ্ধে রিট আবেদন করেন।
রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবলু। তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে রিট আবেদন করেন ওই আসনে মহাজোটের প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ।
৪ প্রার্থীকে ধানের শীষ দিতে নির্দেশ
কয়েকটি আবেদনের শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট বিএনপির চারজনকে ধানের শীষ প্রতীক দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
মানিকগঞ্জ-১ আসনে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীরের পরিবর্তে দলটির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে খোন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলুকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মনজুরুল ইসলাম ওরফে বিমলের পরিবর্তে ধানের শীষ প্রতীক দিতে হবে সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ফজলুর রহমান পটলের স্ত্রী ও লালপুর থানা বিএনপির সদস্য কামরুন্নাহার শিরিনকে।
নওগাঁ-১ আসনে (পোরশা, সাপাহার, নিয়ামতপুর) নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছালেক চৌধুরীর পরিবর্তে নওগাঁ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানকে ধানের শীষ প্রতীক দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বগুড়া-৩ আসনে আব্দুল মুহিত তালুকদারের পরিবর্তে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মোমিন তালুকদার খোকার স্ত্রী মাসুদা মমিনকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে হবে।