একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
Published : 10 Nov 2018, 07:14 PM
নিজের এলাকা হবিগঞ্জ-৪ ( চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলা) থেকে নৌকার প্রার্থী হতে চাইছেন তিনি।
রোববার সকাল ১০টায় ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম তুলবেন ফরাসউদ্দিন।
তিনি শনিবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে রোববার সকালে মনোনয়ন ফরম তুলব।
“আশা করছি, দলীয় মনোনয়ন পাব এবং বিজয়ী হব। আর বিজয়ী হয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে গত দশ বছরে যে বিস্ময়কর অগ্রগতি ঘটিয়েছেন সেটাকে আরও এগিয়ে নিতে অবদান রাখতে চাই।”
হবিগঞ্জ-৪ আসনে বর্তমানে সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের মাহবুব আলী। তার আগে এই আসন থেকে দীর্ঘ দিন সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন এনামুল হক মোস্তফা শহীদ। তিনি মন্ত্রীও হয়েছিলেন।
বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবার নির্বাচনে অংশ না নিলে এবং আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় গেলে ফরাসউদ্দিন অর্থমন্ত্রী হতে পারেন বলে অনেকে মনে করছেন।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের ইশারায় প্রার্থী হচ্ছেন কি না- জানতে চাইলে ফরাসউদ্দিন হেসে বলেন, “সেটা তো পেয়েছিই…!!! তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমার এলাকার লোক খুব করে ধরেছেন…। তারা আমাকে খুব পছন্দ করেন, ভালোবাসেন।
“সব কিছু মিলিয়েই আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছি।”
নিজে নির্বাচিত হলে এবং দল ফের ক্ষমতায় এলে আপনার পরিকল্পনা কী- জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করে আসা ফরাসউদ্দিন বলেন, “আমি অনেক আগেই আমার একটা পরিকল্পনা বা কৌশল ঠিক করে রেখেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে নিয়ে যাওয়ার যে রূপকল্প দিয়েছেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতেই আমি আমার কৌশল ঠিক করেছি।
“কেননা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অবিস্মরণীয়-বিস্ময়কর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই গতি ধরে রাখতে হলে কর্মসংস্থান বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।”
রপ্তানি আয় বাড়াতেও নানামুখী উদ্যোগ নেবেন বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির ছাত্র ফরাসউদ্দিন।
“আমি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। আর সেটা করতে হলে শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করার মধ্য দিয়েই করতে হবে। গত দশ বছরে তিনি বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়ে বিশ্ব দরবারে সম্মানের আসনে বসিয়েছেন, সেটাকে আরও অগ্রসর করার মধ্য দিয়েই করতে হবে।”
তিনি বলেন, “এতোদিন অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেছি। রাজনীতি আর অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক। আমি এই দুটি নিয়েই এখন কাজ করব…। এই দুটির সুন্দর মেলবন্ধনের মাধ্যমেই দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার চেষ্টা করব।”
আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় এলে আপনাকে অর্থমন্ত্রী করা হতে পারে বলে অনেকের ধারণা- আপনি তাতে প্রস্তুত কি না জানতে চাইলে ফরাসউদ্দিন বলেন, “সেটা নিয়ে এখনও ভাবছি না…। দেশের জন্য, মানুষের কল্যাণে, শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ করতে চাই। সেটা যেখানেই থাকি, যেভাবেই হোক না কেন করতে চাই।”
ফরাসউদ্দিন ১৯৪২ সালের ১৮ এপ্রিল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের আসাম প্রদেশের সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমার (বর্তমান বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার) মাধবপুরের নয়াপাড়া ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
শিক্ষা জীবন শুরু করেন রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (বর্তমান নাম) থেকে এবং স্কুল জীবন শুরু হয় গোবিন্দপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ধর্মঘর থেকে তারপর কলেজ জীবন মনতলা সরকারি কলেজ এবং তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
ফরাসউদ্দিন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক 'বাংলাদেশ ব্যাংক'-এর সপ্তম গভর্নর। ১৯৯৮ সালের ২৪ নভেম্বর গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব নেন তিনি।
২০০১ সালের ২২ নভেম্বর পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব ছিলেন ফরাসউদ্দিন।