ফাঁসের ঘটনায় এলসবার্গের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনেছিল রিচার্ড নিক্সনের প্রশাসন, কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট পরে ওই অভিযোগ খারিজ করে দেয়।
Published : 17 Jun 2023, 05:31 PM
ভিয়েতনাম যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কুকীর্তির কথা ফাঁস করে দেওয়া হুইসেলব্লোয়ার ডেনিয়েল এলসবার্গ মারা গেছেন।
শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ার কেনসিংটনে নিজের বাড়িতেই অগ্নাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত ৯২ বছর বয়সী এ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
সাবেক এ মার্কিন সমর বিশ্লেষক ১৯৭১ সালে পেন্টাগনের যেসব নথি ফাঁস করে দিয়েছিলেন, তা তাকে ‘আমেরিকার সবচেয়ে বিপজ্জনক মানুষ’ হিসেবে পরিচিতি এনে দিয়েছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এই ফাঁসের ঘটনায় এলসবার্গের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনেছিল রিচার্ড নিক্সনের প্রশাসন, কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ওই অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে এলসবার্গের পক্ষেই রায় দিয়েছিল।
“ডেনিয়েল ছিলেন সত্যান্বেষী, দেশপ্রেমিক সত্যভাষী, যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনকর্মী, অনন্যসাধারণ স্বামী, পিতা, পিতামহ, প্রপিতামহ, অনেকের প্রিয় বন্ধু এবং অসংখ্য মানুষের অনুপ্রেরণাদাতা। আমরা সবাই তাকে ভীষণভাবে মিস করবো,” বিবৃতিতে বলেছে এলসবার্গের পরিবার।
দশকের পর দশক এলসবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের সরকারগুলোর নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ড ও সামরিক হস্তক্ষেপের তুমুল সমালোচনা করে এসেছেন।
গত শতকের ষাটের দশকে, যখন তিনি হোয়াইট হাউসকে পারমাণবিক কৌশল নিয়ে পরামর্শ দিতেন এবং মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের হয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের মূল্যায়ন করছিলেন, তখন থেকেই তার এই যুদ্ধবিরোধিতা প্রকট হয়ে উঠেছিল।
তিনি সরকারের ৭ হাজার পৃষ্ঠার নথি ফাঁস করে দেন, যাতে একাধিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও তাদের প্রশাসনের প্রতারণার বিষয়টি উঠে আসে। এটাই পরে ‘পেন্টাগন পেপার্স’ ফাঁস নামে পরিচিতি পায়।
তার ফাঁস করে দেওয়া নথির সঙ্গে ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে সরকারি ভাষ্যের গরমিল দেখা যায়। এই ঘটনা ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসানে যেমন ভূমিকা রাখে, তেমনি নিক্সনের পতনের বীজও বপন করে।
এলসবার্গ ছিলেন ‘হুইসেলব্লোয়ারদের গ্র্যান্ডফাদার’, বিবিসিকে বলেছেন গার্ডিয়ানের সাবেক প্রধান সম্পাদক অ্যালান রুসব্রিজার।