ভারতের খালিস্তানপন্থি নেতা অমৃতপালের আত্মসমর্পণ

ধরতে ব্যাপক অভিযান চালানো হলেও ‘ওয়ারিশ দে পাঞ্জাব’ সংগঠনের এই নেতাকে এতদিন খুঁজে পায়নি পুলিশ।

নিউজ ডেস্ক
Published : 23 April 2023, 03:45 AM
Updated : 23 April 2023, 03:45 AM

ভারতের খালিস্তানপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা অমৃতপাল সিং পাঞ্জাব পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গত ১৮ মার্চ থেকে ৩৬ দিন ধরে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। এ সময় তাকে খুঁজে বের করতে ব্যাপক অভিযান চালানো হলেও ‘ওয়ারিশ দে পাঞ্জাব’ সংগঠনের এই নেতাকে খুঁজে পায়নি পুলিশ।

পাঞ্জাব পুলিশ রোববার তার গ্রেপ্তারের কথা নিশ্চিত করেছে বলে খবর ভারতীয় গণমাধ্যমের।

এক টুইটে পুলিশ বলেছে, “আমৃতপাল সিং মোগায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। পাঞ্জাব পুলিশ পরে বিস্তারিত জানাবে। জনগণকে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে, কোনো ভুয়া খবর শেয়ার করবেন না, সত্যাসত্য যাচাই করে তারপর শেয়ার করবেন।”

Also Read: খালিস্তান: শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী যে আন্দোলন ভারতকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে

পুলিশের সূত্রগুলো এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, পলাতক অমৃতপাল পাঞ্জাবের মোগা জেলার রোদ গ্রামের গুরুদুয়ারায় আত্মসমর্পণ করেছেন।

ভারত সরকার অমৃতপালকে ‘খালিস্তানি-পাকিস্তানি’ এজেন্ট বলে বর্ণনা করেছে। অমৃতলাল গত কয়েক বছর ধরে পাঞ্জাবে তৎপরতা চালিয়ে আসছিলেন এবং তাকে প্রায়ই সশস্ত্র সমর্থক বেষ্টিত অবস্থায় দেখা যেত। তিনি নিজেকে খালিস্তানপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা জার্নাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালের অনুসারি বলে দাবি করে থাকেন আর সমর্থকদের মাঝে তিনি ‘দ্বিতীয় ভিন্দ্রানওয়ালে’ বলে পরিচিত।   

পুলিশের অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে পাঞ্জাবের অমৃতসরের কাছে এক থানায় বন্দি সঙ্গীকে মুক্ত করতে অমৃতপাল তার কয়েকশো সমর্থককে সঙ্গে নিয়ে হামলা চালিয়েছিলেন। এর প্রায় এক মাস পর গত ১৮ মার্চ পুলিশ খালিস্তানপন্থি এই নেতাকে প্রথম গ্রেপ্তার করতে তৎপর হয়, আনা হয় অভিযোগ। এর পর থেকেই পলাতক ছিলেন তিনি।

রোববার স্থানীয় সময় ভোরে মোগা জেলোর একটি গুরুদুয়ারার কাছে অমৃতলাল নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে খবর। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা আইনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে প্রথমে অসৃতসরে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে তাকে আসামের ডিব্রুগড়ের কারাগারে পাঠানো হচ্ছে; সেখানে তার আরও আট সহযোগী বন্দি আছেন।

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে কোনো অভিযোগ গঠন ছাড়াই অমৃতপালকে এক বছর বন্দি করে রাখা যাবে। 

অমৃতপাল খালিস্তান বা শিখদের জন্য একটি আলাদা মাতৃভূমিকে সমর্থন করেন। পাঞ্জাবে তার দ্রুত উত্থান ১৯৮০’র দশকে খালিস্তান বিদ্রোহের স্মৃতিই পুনরুজ্জীবিত করেছে। যে বিদ্রোহ কেড়ে নিয়েছিল হাজারো মানুষের প্রাণ।

অমৃতপাল ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, আইনপ্রয়োগে বাধাদান এবং অস্থিরতা তৈরির অভিযোগ এনেছে পুলিশ।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলেছে, অমৃতপাল সিং পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর মাধ্যমে অস্ত্র সংগ্রহ করছিল এবং সাম্প্রদায়িক লাইনে পাঞ্জাবকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছিল।