হাওয়াই মিঠাইয়ে গোলাপি রঙ দিতে ব্যবহার হয় ‘রোডামাইন-বি’, যা তৈরি করে ক্যান্সারের ঝুঁকি।
Published : 22 Feb 2024, 06:58 PM
গ্রাম-শহরে পথে-ঘাটে গোলাপি রঙা হাওয়াই মিঠাই নিয়ে ছুটতে দেখা যায় ফেরিওয়ালাদের; শিশুদের কাছে জনপ্রিয় এই মিষ্টি জাতীয় খাবার নিয়ে মিলছে দুঃসংবাদ।
ভারতের বেশকিছু রাজ্য হাওয়াই মিঠাই বিক্রি নিষিদ্ধ করছে। তারা বলছে, এতে রয়েছে ক্যান্সারের ঝুঁকি।
বিবিসি লিখেছে, গত সপ্তাহে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাডু হাওয়াই মিঠাই বিক্রি নিষিদ্ধ করে। হাওয়াই মিঠাইয়ের নমুনা ল্যাবে পরীক্ষা করে তারা ক্যান্সার সহায়ক উপাদান পাওয়ার কথা জানিয়েছে।
এগুলো বানাতে ব্যবহার করা হচ্ছে রাসায়নিক উপাদান ‘রোডামাইন-বি’, যার ফলে ক্যান্সার হতে পারে বলে জানাচ্ছে রাজ্য সরকার।
চলতি মাসের শুরুতে তামিলনাডুর শহর পদুচেরিতে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়। মিষ্টিজাতীয় এ খাবার নিয়ে এমন আলোচনা ওঠার পর অন্য রাজ্যগুলোও নমুনা নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে।
‘কটন ক্যান্ডি’ বা হাওয়াই মিঠাইকে ভারতে ‘বুড়ির চুল’ও বলা হয়। হালকা আঠালো এই মিষ্টি খাবার মুখের ভেতরে দিলেই হাওয়ার মত মিশে বা গলে যায়। ভারত-বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিশুদের কাছে এটি জনপ্রিয়।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এখন বলছে, খাবারটি মানুষের ধারণার চেয়ে বেশিই ক্ষতিকর।
তামিলনাডুর চেন্নাই শহরের খাদ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা পি সতীশ কুমার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “হাওয়াই মিঠাইয়ে থাকা ক্ষতিকর উপাদানের ফলে ক্যান্সার হতে পারে। গোটা শরীরকেই প্রভাবিত করতে পারে।”
গত সপ্তাহে চেন্নাইয়ের সমুদ্র সৈকতে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করা ফেরিওয়ালাদের সরাতে অভিযান চালায় সতীশ কুমারের দল। তিনি জানান, শহরে বিক্রি হওয়া এই মিঠাই ব্যক্তি উদ্যোগেই তৈরি করা হয়। কোনো নিবন্ধিত কারখানায় বানানো হয় না।
এর কয়েকদিন পর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করে হাওয়াই মিঠাইয়ে ‘রোডামাইন-বি’ পাওয়ার কথা জানিয়ে ক্যান্সার ঝুঁকির কথা বলে রাজ্য সরকার।
এই রঞ্জক পদার্থটিই হাওয়াই মিঠাইয়ে গোলাপী বা পিংক কালার দেয়। মূলত টেক্সটাইল, কসমেটিক পণ্য ও কালি তৈরিতে ‘রোডামাইন-বি’ ব্যবহৃত হলেও এটি মেশানো হচ্ছে হাওয়াই মিঠাইয়ে।
বিভিন্ন গবেষণা দেখাচ্ছে, খাবারে এই রাসায়নিক উপাদান মেশালে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ফুড কালার হিসেবে ইউরোপ ও ক্যালিফোর্নিয়ায় এটি নিষিদ্ধ।
ভারতের তামিলনাডুতে হাওয়াই মিঠাই নিয়ে আলোচনার মধ্যে প্রতিবেশী অন্ধ্র প্রদেশও সরব হয়েছে। এতে ক্যান্সার সহায়ক রাসায়নিক উপাদান কার্সিনোজেনের উপস্থিতি আছে কিনা, সেটা তারা পরীক্ষা করে দেখছে। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে দিল্লিও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয় বলে নিউ ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস জানায়।