রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তির অধীনে ইউক্রেইন ছাড়ল প্রথম শস্যবাহী জাহাজ

এই চুক্তির ফলে বিশ্বব্যাপী দেখা দেওয়া খাদ্য সংকট হ্রাস পাবে এবং খাদ্যশস্যের দাম কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2022, 10:52 AM
Updated : 1 August 2022, 10:52 AM

রাশিয়ার সঙ্গে একটি মাইলফলক চুক্তির অধীনে খাদ্যশস্যবাহী প্রথম জাহাজটি ইউক্রেইনের একটি বন্দর থেকে রওনা হয়েছে।

তুরস্ক ও ইউক্রেইনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেইনের স্থানীয় সময় সোমবার সকালে দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর ওদেসা ছাড়ে জাহাজটি।

রাশিয়া ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে দেশটির বন্দরগুলো অবরোধ করে রেখেছিল, কিন্তু পক্ষ দুটি জাহাজ চলাচল ফের শুরু করার জন্য একটি চুক্তি করে। এই চুক্তির ফলে বিশ্বব্যাপী দেখা দেওয়া খাদ্য সংকট হ্রাস পাবে এবং খাদ্যশস্যের দাম কমবে বলে আশা করা হচ্ছে, জানিয়েছে বিবিসি।

তুরস্ক জানিয়েছে, খাদ্যশস্য নিয়ে রওনা হওয়া সিয়েরা লিওনের পতাকাবাহী জাহাজ রজনির গন্তব্য লেবাননের ত্রিপোলি বন্দর। আসছে সপ্তাহগুলোতে খাদ্যশস্যের আরও কয়েকটি চালান পাঠানোর পরিকল্পনা হয়েছে।

জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় হওয়া এ চুক্তি অনুযায়ী ইউক্রেইনের বন্দরগুলো থেকে ছেড়ে আসা ও ওই বন্দর অভিমুখি জাহাজাগুলো পরিদর্শনের জন্য ইস্তাম্বুলে জয়েন্ট কো-অর্ডিনেশন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। ২৬০০০ টন ভুট্টাবাহী জাহাজ রজনি মঙ্গলবার তুরস্কের জলসীমায় পৌঁছবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জাহাজটির গন্তব্যের পথে রওনা হওয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ করার জন্য তুরস্কের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।

ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা শস্যের এই চালানকে ‘বিশ্বের জন্য স্বস্তির’ বলে মন্তব্য করেছেন। মস্কোয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, ওই জাহাজের রওনা হওয়া ‘অত্যন্ত ইতিবাচক’ অগ্রগতি।

আসছে সপ্তাহগুলোতে ওদেসা অঞ্চলের বন্দরগুলো থেকে আরও ১৬টি জাহাজ খাদ্যশস্য নিয়ে রওনা হবে বলে ইউক্রেইনের অবকাঠামো মন্ত্রী আলেহান্দার কুবরাকোভ জানিয়েছেন।

Also Read: রাশিয়ার মূল হুমকি যুক্তরাষ্ট্র: পুতিন

Also Read: রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেইনের ধনকুবের নিহত

জাতিসংঘ ও তু্রস্কের মধ্যস্থতায় গত মাসে স্বাক্ষরিত চুক্তিটিতে পৌঁছতে ইউক্রেইন ও রাশিয়ার দুই মাস সময় লেগেছে। চুক্তিটির মেয়াদ ১২০ দিন। এরপর উভয়পক্ষ রাজি থাকলে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হবে।

চুক্তির শর্তানুযায়ী, চালান পরিবহনকালে ইউক্রেইনের বন্দরগুলোতে হামলা না চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাশিয়া আর মাইনপাতা জলপথ দিয়ে মালবাহী জাহাজগুলো যাওয়ার সময় সেগুলোকে তাদের নৌবাহিনীর জাহাজগুলো পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে বলে ইউক্রেইন সম্মত হয়েছে।

জাতিসংঘের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে তুরস্ক ওই জাহাজগুলোকে পরীক্ষ করে দেখবে; কারণ রাশিয়ার আশঙ্কা এসব জাহাজের মাধ্যমে ইউক্রেইনে অস্ত্র পাচার করা হতে পারে।

মূলত ইউক্রেইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় তিনটি বন্দর, ওদেসা, চর্নমোর্স্ক ও পিভদেন্নি দিয়ে দেশটির শস্যের চালান গন্তব্যগুলোতে পাঠানো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মোট গম সরবরাহের প্রায় একটি তৃতীয়াংশ যৌথভাবে রাশিয়া ও ইউক্রেইন রপ্তানি করে। ২০১৯ সালে ইউক্রেইন বিশ্ব বাজারে সরবরাহ হওয়া ভুট্টার ১৬ শতাংশ ও সূর্যমুখি তেলের ৪২ শতাংশের যোগান দিয়েছিল।

কিন্তু যুদ্ধের কারণে এসব রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী গম জাতীয় খাদ্য পণ্য, রান্নার তেল ও সারের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পায়।