রাশিয়ার মূল হুমকি যুক্তরাষ্ট্র: পুতিন

যে কোনো সম্ভাব্য আক্রমণকারীকে পরাজিত করার মতো সামরিক শক্তি রাশিয়ার আছে বলে হুঁশিয়ার করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2022, 06:32 AM
Updated : 1 August 2022, 06:32 AM

রাশিয়ার নৌবাহিনীর গৃহীত এক নতুন নীতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে দেশটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বলে নির্ধারণ করা হয়েছে।

রোববার দেশটির নৌ-দিবসে নৌবাহিনীর গৃহীত এ নতুন নীতিতে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রাশিয়ার জার পিটার দ্য গ্রেটের প্রতিষ্ঠিত সাবেক রুশ সাম্রাজ্যের রাজধানী সেইন্ট পিটার্সবার্গে দেশটির নৌ-দিবসের ভাষণে পুতিন রাশিয়াকে একটি শক্তিশালী নৌ শক্তিতে পরিণত করায় ও বিশ্বে রুশ রাষ্ট্রের মর্যাদা বৃদ্ধি করায় পিটারের প্রশংসা করেন; জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে পুতিন জানান, রাশিয়ার জিরকন হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র অনন্য এবং যে কোনো সম্ভাব্য আক্রমণকারীকে পরাজিত করার মতো সামরিক শক্তি রাশিয়ার আছে।

এই বক্তব্যের আগে তিনি নৌবাহিনীর ৫৫ পাতার নৌ নীতিতে স্বাক্ষর করেন। এ নীতিতে রাশিয়ার নৌবাহিনীর ‍বিস্তৃত কৌশলগত লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তাতে রাশিয়াকে বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত একটি ‘আসামান্য সামরিক শক্তিতে’ পরিণত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

এই নীতিতে রাশিয়ার প্রধান হুমকি হিসেবে ‘বিশ্বের মহাসাগরগুলোতে প্রভাব বিস্তার করার যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত নীতি’ ও রাশিয়ার সীমান্তের কাছে নেটো সামরিক জোটের তৎপরতার কথা বলা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, যদি কূটনীতিক ও অর্থনৈতিক উপায়গুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে তাহলে ওই পরিস্থিতিতে রাশিয়া মহাসাগরগুলোতে তাদের সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে পারে।

বিশ্বজুড়ে রাশিয়ার পর্যাপ্ত নৌঘাঁটি নেই, এমনটি স্বীকার করে রাশিয়া অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে কৌশলগত ও নৌ বিষয়ক সহযোগিতার উন্নয়ন এবং পাশপাশি ইরান, ইরাক, সৌদি আরব ও ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াবে বলে ঘোষিত নৌ নীতিতে বলা হয়েছে।

এতে রাশিয়ার দূর প্রাচ্য অঞ্চলে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে উচ্চ-প্রযুক্তির জাহাজ নির্মাণ শিল্প গড়ে তুলে অত্যাধুনিক বিমানবাহী রণতরী নির্মাণের কথাও বলা হয়েছে।

নথিটিতে বলা হয়েছে, “এই নীতি অনুযায়ী রুশ ফেডারেশন বৈশ্বিক মহাসাগরগুলোতে দৃঢ় ও অটলভাবে তাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে, পর্যাপ্ত সামুদ্রিক শক্তি তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।”

নিজের ভাষণে ইউক্রেইন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেননি পুতিন, শুধু কৃষ্ণ সাগর ও আজভ সাগরে রাশিয়ার ‘ভূরাজনৈতিক অবস্থান ব্যাপক শক্তিশালী’ করার কথা বলেছেন।

Also Read: রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেইনের ধনকুবের নিহত

রাশিয়ার নৌবাহিনীর নতুন নীতিতে আর্কটিক মহাসাগরকেও ঘিরে পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ মহাসাগরটি রাশিয়ার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়া আর্কটিককে সামরিকায়ন করতে চাইছে বলে যুক্তরাষ্ট্র বারবার অভিযোগ করে আসছে।

ভৌগলিক আয়তন বিবেচনায় বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়ার সমুদ্র সীমা ৩৭ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার, যা পূর্বে জাপান সাগর থেকে শুরু করে উত্তর শ্বেত সাগর হয়ে দক্ষিণে কৃষ্ণ সাগর ও ক্যাস্পিয়ান সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।

পুতিন জানিয়েছেন, কয়েক মাসের মধ্যেই অ্যাডমিরাল গোর্শকোফ ফ্রিগেটকে জিরকন হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া হবে আর সেগুলো রাশিয়ার স্বার্থ অনুযায়ী মোতায়েন করা হবে।

রাশিয়ার এই জিরকন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে নয়গুণ গতিতে ছুটে গিয়ে লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে। গত বছর রাশিয়া যুদ্ধজাহাজ ও ডুবোজাহাজ থেকেও পরীক্ষামূলকভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল।