চীনের গ্রেট হল অব পিপলে মা ইং-জেউয়ের সঙ্গে বৈঠককালে শি বলেছেন, তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের পুনরেকত্রীকরণ কেউ ঠেকাতে পারবে না।
Published : 10 Apr 2024, 11:51 PM
তাইওয়ানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মা ইং-জেউর সঙ্গে বিরল বৈঠক করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। মা জেউ চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে সমর্থন করেন। তাইওয়ানে চীনের অপছন্দের নতুন নেতার শপথের আগে দিয়ে এই বৈঠক হল।
চীনের গ্রেট হল অব পিপলে মা এর সঙ্গে বৈঠককালে শি বলেছেন, তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের পুনরেকত্রীকরণ কেউ ঠেকাতে পারবে না।
তিনি বলেন, “তাইওয়ান প্রণালীর দুই পাশের মানুষই চীনা নাগরিক। বাইরের কোনও হস্তক্ষেপই এই দেশ এবং পরিবারের আবার এক হওয়ার ঐতিহাসিক ধারা রুখতে পারবে না।”
ওদিকে, মা ইং-জেউ বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বহু তাইওয়ানি নাগরিকের জন্যই অস্বস্তির বিষয় হয়ে আছে। দু’পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হলে তা চীনের জনগণের জন্য অসহনীয় হবে। তাইওয়ান প্রণালীর দুই পাশের চীনারাই শান্তিপূর্ণভাবে সব বিরোধ নিষ্পত্তি করতে এবং সংঘাত এড়িয়ে চলতে যথেষ্ট বিচক্ষণ।”
শি এর মতো একই সুরে মা এও বলেন যে, “তাইওয়ান প্রণালীর দুই পাশে ভিন্ন ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠলেও দুপাশের মানুষই আসলে চীনের।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, মা এর এই চীন সফর চীন-তাইওয়ানের শান্তিপূর্ণ পুনরেকত্রীকরণ এগিয়ে নেওয়ারই চেষ্টা। চীন যাতে সামরিক অভিযানের মধ্য দিয়ে তাইওয়ান দখলে নিতে না পারে সেজন্য এটিই একমাত্র বিকল্প পথ।
মা ইং-জেউ তাইওয়ানের শাসনক্ষমতায় ছিলেন ২০০৮ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত। তিনি এখনও তাইওয়ানের বিরোধীদল কুওমিনতাংয়ের ঊর্ধ্বতন সদস্য। সম্প্রতি তিনি ১১ দিনের সফরে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে গেছেন।
বুধবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি’র সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রারমাধ্যম সিসিটিভি।
১৯৪৯ সালে গৃহযুদ্ধে মাও জে দংয়ের কমিউনিস্ট পার্টির কাছে হারের পর পরাজিত চীন সরকার তাইওয়ানে আশ্রয় নেয়। এরপর থেকে কোনও ক্ষমতাসীন তাইওয়ানি নেতা চীন সফর করেননি।
মা ইং-জেউ গত বছর প্রথম সাবেক তাইওয়ানি নেতা হিসেবে চীন সফর করেছিলেন। এবার তিনি দেশটিতে দ্বিতীয় সফরে রয়েছেন। এর আগে ২০১৫ সালের শেষ দিকে সিঙ্গাপুরে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেছিলেন মা।
চীন মনে করে তাইওয়ান তাদেরই অংশ। তবে তাইওয়ান বিশ্বাসী নিজেদের স্বাধীনতায়। তাদের নিজস্ব সংবিধান আছে। তারা চীনের অংশ হতে চায় না। রক্ষা করতে চায় নিজেদের সার্বভৌমত্ব।
কিন্তু 'এক চীন' নীতির আওতায় তাইওয়ানকে যে কোনও মূল্যে করায়ত্ত করতে চায় বেইজিং। তাইওয়ানের বেশির ভাগ মানুষের মতো সাবেক প্রেসিডেন্ট মা ইং-জেউও পুনরেকত্রীকরণের পক্ষে নন। তবে তিনি শান্তিরক্ষা করতে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখার পক্ষে।
এবারের চীন সফরকালে শি’ এর সঙ্গে বৈঠকে তিনি যা বলেছেন তাতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে তাইওয়ানের চীনা নীতি নির্ধারণী মূল ভূখন্ড বিষয়ক পরিষদ। তারা বলেছে, এই সফরে মা তাইওয়ানের জনগণের সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষিত রাখার দাবি এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিষয়টি সরকারিভাবে তুলে ধরেননি।
পরিষদ আরও বলেছে, তাইওয়ানে হস্তক্ষেপ করা চীনের বন্ধ করা উচিত। সেইসঙ্গে তাইপের সঙ্গে সব বিরোধ সম্মানজনকভাবে শান্তিপূর্ণ এবং যৌক্তিক আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান করা উচিত চীনের।