যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭০ সালে ‘ম্যাথমেটিক্যাল সোসিওলোজি’ নিয়ে পিএইচডি থিসিস শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ না করেই ফিরে গিয়েছিলেন জন্মভূমি ওয়েলসে; এরপর কেটে যায় কয়েক দশক।
Published : 15 Feb 2023, 01:16 PM
ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলাকালে সত্তরের দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ‘জটিল’ এক বিষয়ে পিএইচডি অধ্যয়ন শুরু করেছিলেন এক ব্যক্তি, ওই বিষয়ে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করলেন ৫২ বছর পর।
বিবিসি জানিয়েছে, নিক অ্যাক্সটেন নামের ওই ব্যক্তি ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ম্যাথমেটিক্যাল সোসিওলোজি’ নিয়ে তার পিএইচডি থিসিস শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষ না করেই ফিরে গিয়েছিলেন জন্মভূমি যুক্তরাজ্যের ওয়েলসে; এরপর কেটে যায় কয়েক দশক।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্সটেনকে ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে, সেখানে ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি গবেষণা করেন। অ্যাক্সটেনের স্ত্রী ক্লেয়ার অ্যাক্সটেন এবং ১১ বছর বয়সী নাতনির ফ্রেয়াও উপস্থিতি ছিলেন তার ডিগ্রি নেওয়ার অনুষ্ঠানে।
অ্যাক্সটেন বিবিসিকে বলেন, তরুণ বয়সে মর্যাদাপূর্ণ ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পেয়েছিলেন; কিন্তু তার গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল ‘অসম্ভব কঠিন‘। কিছু সমস্যা এত বড় হয় যে, তা বুঝতে জীবনের অধিকাংশ সময় লেগে যায়।
“সেগুলোর জন্য দীর্ঘ কঠিন চিন্তার প্রয়োজন। এই একটি জিনিসেই আমার ৫০ বছর লেগেছে।”
অ্যাক্সটেনের গবেষণায় রয়েছে মানুষের আচরণ বোঝার নতুন তত্ত্ব। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে যে মূল্যবোধ রয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে তিনি ওই গবেষণা করেন, যেখানে তিনি বিশ্বাস করেন, এর ফলে মানুষের ‘বিহ্যাভেরিয়াল সাইকলোজির’ দিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী অ্যাক্সটেনের দুই সন্তান ছাড়াও চার নাতি-নাতনি রয়েছে। ভিয়েতনাম যুদ্ধচলাকালে ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ডের পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের লিডসে স্নাতকে পড়ালেখা শুরু করেছিলেন তিনি।
ষাটের দশকের সেই সময়ের কথা স্মরণ করে অ্যাক্সটেন বলেন, “তখনও ‘ফ্লাওয়ার পাওয়ার’ স্লোগান ছিল, বিপ্লবী অনুভূতি ছিল। সেটি এমন একসময়, যখন ভিয়েতনাম যুদ্ধ,…প্যারিস ও প্রাগে ছাত্রদের বিক্ষোভ চলছিল।
“জ্যাক স্ট্র ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ছিলেন লিডসে। সোসিওলোজি ও সাইকলোজি হঠাৎ দামি সাবজেক্ট হয়ে ওঠে সেসময়। আমি সেসব পড়তে গিয়েছিলাম, কারণ আমি মানুষকে বুঝতে চাইছিলাম।”
অ্যাক্সটেন জানান, ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলে ‘পরিপক্ক’ ছাত্র হিসেবে ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের সময়টা তার ভালোই কেটেছে।
“অন্য গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের সকলের বয়স ২৩ এর কাছাকাছি হলেও তারা আমাকে তাদেরই একজন হিসেবে গ্রহণ করেছে। তারা সকলেই মেধাবী, নানা আইডিয়া রয়েছে তাদের। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলতে পছন্দ করতাম, বিশেষ করে বিকালে বিয়ারের দোকানে।”
বৈচিত্র্যময় ক্যারিয়ারের অধিকারী অ্যাক্সটেন যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় জীবন কাটিয়েছেন। অক্সফোর্ড প্রাইমারি সায়েন্সের স্কুল শিক্ষণ প্রোগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান লেখক তিনি।