ইরানের হাজারো কারাবন্দিকে ক্ষমা করলেন খামেনি

যাদের বিরুদ্ধে বিদেশি সংস্থার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি, নরহত্যা বা রাষ্ট্রের সম্পদ বিনষ্ট করার মত গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তারা ক্ষমা পাবেন না।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2023, 04:19 PM
Updated : 5 Feb 2023, 04:19 PM

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি দেশটির হাজারো কারাবন্দিকে ক্ষমা করেছেন। এমনকী ওইসব কারাবন্দি যারা সাম্প্রতিক সরকার বিরোধী বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তারাও ক্ষমা পাবেন।

তবে ওই ক্ষমা নিঃশর্ত নয়। বরং ক্ষমা পেতে হতে কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম।

১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক অভ্যুত্থানের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আগের দিন এই ক্ষমা ঘোষণা করা হল।

তেহরানে নীতি পুলিশের হেফাজতে মাশা আমিনি নামে ২২ বছরের এক কুর্দি তরুণীর মৃত্যু ঘিরে গত সেপ্টেম্বর মাসে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, ওই বিক্ষোভ চলাকালে পাঁচ শতাধিক বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়েছে। যাদের মধ্যে অন্তত ৭০ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন। প্রায় ২০ হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে কয়েকজনকে নানা অপরাধে দোষীসাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে অন্তত পাঁচ জনের ফাঁসি কার্যকরও হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের ফাঁসি কার্যকর করা শুরু হওয়ায় পর বিক্ষোভের গতি অনেকটাই কমে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, বিচার বিভাগের প্রধানের কাছ থেকে একটি চিঠি পাওয়ার পর আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সর্বশেষ এই ক্ষমার সিদ্ধান্ত নেন।

ওই চিঠিতে বলা হয়, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা অনেকেই বয়সে তরুণ এবং বিদেশি প্রভাব ও প্রচারের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে বিপথগামী হয়েছিলেন।

তাদের অনেকে এখন অনুতপ্ত হয়েছেন এবং ক্ষমা ভিক্ষা করছেন বলে ওই চিঠিতে দাবি করা হয়।

তাবে যাদের বিরুদ্ধে বিদেশি সংস্থার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি, নরহত্যা বা রাষ্ট্রের সম্পদ বিনষ্ট করার মত গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তাদের ক্ষমা করা হবে না।

দ্বৈত নাগরিক যারা বর্তমানে ইরানের কারাগারে আছেন তাদের বেলাও এই ক্ষমা কার্যকর হবে না।

ইরানের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১০ অনুযায়ী, বিচার বিভাগের পরামর্শ ক্রমে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা যে কাউকে ক্ষমা করার অধিকার রাখেন।

বিবিসি জানায়, আয়াতুল্লাহ খামেনির ক্ষমা পেতে হলে কী করতে হবে তার ব্যাখ্যা করেছেন বিচার বিভাগের উপ প্রধান সাদেক রহিমি।

তিনি বলেন, যারা ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন তাদের অবশ্যই লিখিত আকারে অঙ্গীকার করতে হবে যে, তারা যা করেছেন তার জন্য তারা অনুতপ্ত। নতুবা তারা মুক্তি পাবেন না।