রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে নেপালের প্রেসিডেন্ট হলেন রাম চন্দ্র পাওদেল

নেপালের প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড ক্ষমতাসীন জোটের বাইরে গিয়ে গত মাসে সমর্থন দিয়েছিলেন পাওদেলকে; এরপরই তার জোটের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2023, 08:00 AM
Updated : 10 March 2023, 08:00 AM

ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক জোটে চলমান তিক্ত সংকটের মধ্যে নেপালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রাম চন্দ্র পাওদেল।

বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের ভোটে শতাব্দী পুরনো রাজতন্ত্র থেকে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ফেরা দেশটির তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে পাওদেল নির্বাচিত হন।

রয়টার্স জানিয়েছে, নেপালের পুরনো রাজনৈতিক দল নেপালি কংগ্রেস পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা পাওদেল। ক্ষমতাসীন জোটের বাইরে গত মাসে তাকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিয়েছিলেন সাবেক মাওবাদী গেরিলা নেতা প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল ওরফে 'প্রচণ্ড'। এরপরই প্রচণ্ডের জোটের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়।

পাওদেলের বিপরীতে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছিলেন প্রচণ্ডের জোটের প্রধান শরিক দল কমিউনিস্ট ইউনিফায়েড মার্কসিস্ট-লেলিনিস্ট (ইউএমএল) এর সুবাস চন্দ্র নেমওয়াং। তাকে সমর্থন না দিয়ে পাওদেলকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেওয়ায় প্রচণ্ডের সঙ্গে দলটির টানাপোড়েন তৈরি হয়।

ওই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে ইউএমএল, যে কারণে চলতি মাসে তাকে আস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হবে।

কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের নেতারা বলছেন, দলটির চেয়ারম্যান মাওবাদী নেতা প্রচণ্ড আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নেপালি কংগ্রেস পার্টি ও অন্যান্য ছোট দলগুলোর সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক জোট গড়ার কথা ভাবছেন।

জোটের বাইরে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মনোয়ন দিয়ে জোটের ভেতরে ভাঙনের পাশাপাশি ইতোমধ্যে আরেকটি সংকটে রয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী। ২০০৬ সালে শেষ হওয়া এক দশকের গৃহযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। ওই গৃহযুদ্ধে হাজারো মানুষের প্রাণহানির ঘটনা তদন্ত এবং তাকে গ্রেপ্তারের এক আবেদনের ওপর শুনানি করবে সুপ্রিম কোর্ট।

রাষ্ট্র পরিচালিত নেপাল টেলিভিশন জানিয়েছে, সাবেক স্পিকার পাওদেল পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের ৫৬৬ সদস্য এবং সাতটি প্রাদেশিক পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে পেয়ে ইউএমএল পার্টির নেমওয়াংকে পরাজিত করেন।

নেপালের প্রেসিডেন্টকে বহুলাংশে শুধু আনুষ্ঠানিক ভূমিকা পালন করতে হয়; তবে রাজনৈতিক সংকটের সময় তিনি প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন প্রেসিডেন্টের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিরপেক্ষভাবে সাংবিধানিক ভূমিকা বজায় রাখা।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ বিপিন অধিকারী বলেছেন, নেপালের প্রেসিডেন্ট স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন বলে মনে করা হয় না অথবা তার আলাদা কোনো ক্ষমতাও নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিনি সুপারিশের কাজটি করে থাকেন আর সেইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিতে কাজ করেন।

স্যোশাল ডেমোক্র্যাট পাওদেল আগের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারির স্থলাভিষিক্ত হবেন। পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে আগামী সপ্তাহেই অবসরে যাচ্ছেন নেপালের দ্বিতীয় ও প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ভান্ডারি।