সুইস সংস্থা আইকিউ এয়ারের বিশ্ব বায়ুর গুণমান সংক্রান্ত প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের সমীক্ষায় এ তকমা পেয়েছে ভারতের রাজধানী।
Published : 20 Mar 2024, 08:50 PM
সুইস সংস্থা আইকিউ এয়ারের বিশ্ব বায়ুর গুণমান সংক্রান্ত প্রতিবেদনে ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানী শহরের তকমা পেয়েছে ভারতের নয়াদিল্লি।
প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩ সালে ১৩৪টি দেশের ওপর চালানো সমীক্ষায় এও দেখা গেছে যে, বিশ্বে বায়ুর গুণমান খারাপ থাকা দেশগুলোর তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। এ অবস্থান বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের ঠিক পরেই।
২০২২ সাল থেকেই বায়ুদূষণ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে ভারতে। ২০২২ সালে সবচেয়ে দূষিত দেশের তালিকায় অষ্টম স্থানে ছিল ভারত। কিন্তু বায়ুর মান ক্রমাগত নিম্নমুখী হতে থাকায় এবার দেশটি তৃতীয় স্থানে চলে এসেছে।
ভারতের কয়েকটি নগরীতে বায়ুদূষণ এক মারাত্মক সমস্যা। বায়ু দূষণের জেরে বাড়ছে হাঁপানি, ক্যান্সার, স্ট্রোক এবং ফুসফুসের রোগ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত শিল্পায়ন এবং পরিবেশ আইন ঠিকমত প্রয়োগ না হওয়াটা ভারতে বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়ায় ভূমিকা রাখছে।
গত কয়েকদশকে ভারতে প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু শিল্পক্ষেত্রে জোরাল কোনও নিয়মবিধি না থাকায় কলকারখানাগুলো দূষণ-নিয়ন্ত্রণকারী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দ্রুত নগরায়ণের ফলেও দূষণের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে।
আইকিউ এয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে পিএম ২.৫ এর গড় মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৫৪.৪ মাইক্রোগ্রাম। যেখানে বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫ এর নিরাপদ মাত্রা হচ্ছে, প্রতি ঘনমিটারে ১২ থেকে ১৫ মাইক্রোগ্রাম।
পিএম ২.৫ এর এই মাত্রা শ্বাস নেওয়ার জন্য নিরাপদ বলে গণ্য করা হয়। আর এই মাত্রা যদি প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ হয় তাহলেই তাকে বলা হয় অস্বাস্থ্যকর।
এই হিসাবে ভারতের রাজধানী দিল্লির বাতাসের মান গোটা দেশের তুলনায় অনেক বেশি খারাপ। দিল্লিতে পিএম ২.৫ এর মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৯২ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম।
বিবিসি জানায়, ভারত বছরজুড়েই খারাপ বাতাস সামাল দিতে হিমশিম খায়। তবে বাতাস বিশেষ করে বেশি বিষাক্ত হয়ে ওঠে শীতকালে। গতবছর ভারত সরকার বায়ুদূষণের কারণে কয়েকদিনের জন্য স্কুল ও কলেজ বন্ধ করে দিয়েছিল।
বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে দিল্লি হলেও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরীর তকমা পেয়েছে বিহারের বেগুসরাই এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গুয়াহাটি। তাছাড়াও রয়েছে ভিউয়ান্দি, অসপুর,পটনা,ধরুহেরা, গাজিয়াবাদ, ছাপড়া,গ্রেটার নয়ডা, গুরুগ্রাম, রোহতক ও মুজফ্ফর নগর।
বিশ্বের কেবল ৭ টি দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পিএম ২.৫ এর বার্ষিক নির্দেশিকায় নির্ধারিত মাত্রার মধ্যে থাকতে সক্ষম হয়েছে। এই দেশগুলোর মধ্যে আছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, আইসল্যান্ড, ফিনল্যান্ড। এসব দেশে বার্ষিক গড় পিএম ২.৫ প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম বা তার চেয়ে কম।