নাগোরনো-কারাবাখ: আর্মেনিয়ায় পালিয়েছেন ৩০ হাজার শরণার্থী

আজারবাইজান গত সপ্তাহে নাগোরনো-কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে অঞ্চলটির প্রায় ৩০ হাজার জাতিগত আর্মেনীয় পালিয়ে গেছেন আর্মেনিয়ায়। এ সংখ্যা ভূখণ্ডটির মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ।

আর্মেনিয়ার দিকে যাওয়া একমাত্র সড়কটিতে শরণার্থীদের বহনকারী শত শত গাড়ি লাইন ধরে আছে, প্রতিবেশী দেশটিই তাদের গন্তব্য।

আজারবাইজান বলেছে, নাগোরনো-কারাবাখে বাসিন্দারা নিরাপদ থাকবেন। কিন্তু আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেছেন, ‘জাতিগত নিধন’ শুরু হয়ে গেছে।

নাগোরনো-কারাবাখ আনুষ্ঠানিকভাবে আজারবাইজানের অংশ হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগত আর্মেনীয়রা তিন দশক ধরে ভূখণ্ডটি শাসন করে এসেছে। আর দক্ষিণ ককেশাসের এই পার্বত্য অঞ্চলটির আর্মেনীয়দের সমর্থন যুগিয়েছে প্রতিবেশী আর্মেনিয়া। আর্মেনিয়ার মিত্র রাশিয়াও এতে ইন্ধন দিয়েছে।

গত সপ্তাহে মাত্র ২৪ ঘণ্টার এক সামরিক অভিযানে আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এ সময় দুই পক্ষের লড়াইয়ে অন্তত ২০০ জাতিগত আর্মেনীয় এবং আজারবাইজানের কয়েক ডজন সৈন্য নিহত হয়। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া অস্ত্রবিরতির শর্ত হিসেবে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা তাদের অস্ত্র সমর্পণে রাজি হয়।

আজারবাইজান বলেছে, নাগোরনো-কারাবাখের জাতিগত আর্মেনীয়দের ‘পূর্ণ নাগরিক’ অধিকার দেওয়া হবে, কিন্তু স্থানীয়রা তা বিশ্বাস না করে পালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে বিতরণ করা মানবিক ত্রাণের স্বল্পতাও এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোমবার সন্ধ্যায় নাগোরনো-কারাবাখের প্রধান শহর খানকেনদির (স্তেপানকের্ত) এক জ্বালানি ডিপোতে বড় ধরনের বিস্ফোরণে অন্তত ৬৮ জন নিহত হন। তাদের প্রায় সবাই ওই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার পথে গাড়িতে জ্বালানি তেল নেওয়ার জন্য সেখানে ভিড় করেছিলেন।

এ ঘটনায় আরও প্রায় ৩০০ জন আহত হয়েছেন, এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ১০৫ জন। কী কারণে ওই বিস্ফোরণ ঘটেছে তা স্পষ্ট হয়নি।

সীমান্তে জাতিগত আর্মেনীয়দের কঠোর তল্লাশি করছে আজারবাইজানের সীমান্তরক্ষীরা। দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ‘যুদ্ধাপরাধীদের’ খোঁজে এ তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

আজারবাইজানের এক সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, যে আর্মেনীয় যোদ্ধারা কারাবাখে তাদের অস্ত্র সমর্পণ করেছে তারা সাধারণ ক্ষমার আওতায় পড়বে, কিন্তু যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে তাদের ধরা হবে। সংবাদসূত্র: বিবিসি

(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)