মিয়ানমার সংকট, চীন সাগরের উত্তেজনা নিয়ে বসছেন আসিয়ান মন্ত্রীরা

ছবি: রয়টার্স

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিয়ানমারের প্রাণঘাতী রাজনৈতিক সংকট আর দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমা নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনের উপায় বের করতে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। 

দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমা নিয়ে চীনের সঙ্গে আসিয়ান জোটের কিছু সদস্য রাষ্ট্রের বিরোধ চলছে।

ইন্দোনেশিয়ায় মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিকদের এ বৈঠক শুরু হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে এমন এক সময়ে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এ বৈঠক হচ্ছে, যখন দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার গলার কাঁটা হয়ে থাকা বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জোটটির সক্ষমতা এবং এর ঐক্য ঘিরে সন্দেহ বাড়ছে।

এই চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে সবার ওপরে স্থান পাচ্ছে মিয়ানমারের জন্য আসিয়ানের শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় ঘাটতি।

সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানানো ওই শান্তি পরিকল্পনায় মিয়ানমারের সামরিক শাসকরা তাৎক্ষণিকভাবে আসিয়ানের সঙ্গে একমত হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ২০২১ সালে ক্ষমতা দখল করা সামরিক জান্তা।

জুনে প্রকাশিত জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেনা অভ্যুত্থানের পর ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর কঠোর দমনপীড়নে তিন হাজার ৪০০-র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, গ্রেপ্তার হয়েছে ২২ হাজারের বেশি মানুষ।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক সম্প্রতি মিয়ানমারের ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ঘটনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। দেশটির সামরিক জান্তাকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

এ সপ্তাহে জাকার্তায় হতে যাওয়া বৈঠকের মতো আসিয়ানের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকগুলোতে মিয়ানমারের জান্তা নেতাদের উপস্থিতি নিষিদ্ধ রেখেছে আসিয়ান। তবে জোটের এখনকার চেয়ার ইন্দোনেশিয়া পর্দার আড়ালে জান্তা এবং তাদের বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ বৈঠকে দক্ষিণ চীন সাগরের ব্যবস্থাপনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে থমকে থাকা আলোচনা ত্বরান্বিতও করতে চাইছে ইন্দোনেশিয়া। এই আলোচনা কৌশলগত ওই জলসীমায় নৌযান এবং এর উপর দিয়ে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি তৈরিতে ২০০২ সালে চীন ও আসিয়ানের মধ্যে হওয়া প্রতিশ্রুতিকে আরও এগিয়ে নিতে পারে। 

গুরুত্বপূর্ণ এ দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে প্রতিবছর তিন লাখ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়। এই সাগরের জলসীমার মালিকানা নিয়ে চীনের সঙ্গে ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ব্রুনেইয়ের বিরোধ রয়েছে।

কয়েকদিনের মধ্যেই আসিয়ানের পূর্ব এশিয়া সম্মেলন ও ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা আলোচনা আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনেরও এসব আয়োজনে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।