আকস্মিক সফরে মারিওপোলে পুতিন, অধিকৃত দনবাসে প্রথমবার

হেলিকপ্টারে উড়ে মারিওপোলে গিয়ে নিজেই গাড়ি চালিয়ে শহরটির বেশ কয়েকটি জেলা ঘুরে দেখেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি বিভিন্ন স্থানে থামেন এবং বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাও বলেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2023, 07:36 AM
Updated : 19 March 2023, 07:36 AM

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আচমকা এক সফরে মারিওপোলে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

গত বছর প্রতিবেশী দেশে ক্রেমলিনের ভাষায় ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর পর রুশ বাহিনীর দখলে থাকা দনবাসে এটাই তার প্রথম সফর, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইউক্রেইনের কাছ থেকে ক্রাইমিয়া নিয়ে নেওয়ার বর্ষপূর্তিতে অঘোষিত এক সফরে শনিবার উপদ্বীপটিতে যান পুতিন, এরপরই তিনি মারিওপোল যান।

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির দুই দিনের মাথায় তিনি অধিকৃত এলাকাগুলোতে এ সফর করলেন।

দীর্ঘ, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর গত বছরের মে মাসে আজোভ সাগরের তীরে অবস্থিত মারিওপোল রাশিয়ার দখলে আসে। কিইভ ও এর আশপাশের অঞ্চল থেকে পিছু হটার পর সেটাই ছিল রুশ বাহিনীর প্রথম বড় কোনো সাফল্য।

ক্রেমলিনকে উদ্ধৃত করে রোববার রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলো জানায়, পুতিন হেলিকপ্টারে উড়ে মারিওপোলে যান। তিনি নিজেই গাড়ি চালিয়ে শহরটির বেশ কয়েকটি জেলা ঘুরে দেখেন। বিভিন্ন স্থানে থামেন ও বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন।

যুদ্ধ শুরুর পর রুশ প্রেসিডন্ট আর কখনোই যুদ্ধক্ষেত্রের এতটা কাছে যাননি।

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে অবশ্য একাধিকবার কিইভের সৈন্যদের মনোবল বাড়াতে যুদ্ধ চলছে এমন এলাকাগুলো সফর করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে পুতিন বেশিরভাগ সময় নিজেকে ক্রেমলিনের ভেতরেই আবদ্ধ রেখেছেন।

কিইভ এবং এর পশ্চিমা মিত্ররা বলছে, গত ১৩ মাস ধরে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে, লাখো মানুষকে উদ্বাস্তু করে রাশিয়া যে যুদ্ধ চালাচ্ছে, তার মূল লক্ষ্য হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী কায়দায় জমি দখল।

অন্যদিকে মস্কোর ভাষ্য হচ্ছে, ইউক্রেইনকে নেটো থেকে দূরে রাখতে, তাকে ‘নাৎসিমুক্ত’ করতে এবং ইউক্রেইনে থাকা রুশভাষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাধ্য হয়েই তাকে এই বিশেষ সামরিক অভিযানে নামতে হয়েছে।

পুতিন মারিওপোলে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বানানো নতুন আবাসিক এলাকা নেভস্কি জেলায় এক পরিবারের সঙ্গে তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন বলে জানিয়েছে রুশ গণমাধ্যমগুলো।

“রাষ্ট্রপ্রধান ইয়ট ক্লাব এলাকায় মারিওপোলের উপকূলরেখা, থিয়েটার ভবন ও শহরের দর্শনীয় নানান স্থান পরিদর্শন করেন,” ক্রেমলিনের প্রেস বিভাগকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে ইন্টারফ্যাক্স।

মারিওপোল দোনেৎস্কের মধ্যে পড়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে পুতিন ইউক্রেইনের যে ৪টি এলাকাকে ভূখণ্ডভুক্ত করেছেন দোনেৎস্ক তার একটি।

কিইভ ও তার পশ্চিমা মিত্ররা পুতিনের এই পদক্ষেপকে অবৈধ অ্যাখ্যা দিয়েছেন।

দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক মিলিয়ে শিল্পসমৃদ্ধ দনবাস এলাকা, যেখানে চলা তুমুল লড়াই ইউরোপের গত কয়েকটি প্রজন্ম আর কখনোই দেখেনি।

রোববার রুশ গণমাধ্যমগুলো আরও জানিয়েছে, পুতিন ইউক্রেইনে তার সামরিক অভিযান চালানো শীর্ষ কমান্ডারদের সঙ্গেও দেখা করেছেন। এই কমান্ডারদের মধ্যে ভ্যালেরি গেরাসিমভও আছেন, যিনি ইউক্রেইনে মস্কোর যুদ্ধের মূল দায়িত্বে।