কোভিড মহামারীর সময় মানুষের গতিবিধি নজরে রাখা একটি ফোন অ্যাপ নিষ্ক্রিয় করার ঘোষণা দিয়েছে চীন।
চীনের জাতীয় পর্যায়ের এই অ্যাপটি তিন বছর ধরে চালু ছিল। সোমবার দিনের শেষভাগ থেকে অ্যাপটি অফলাইন হয়ে যাবে।
বিক্ষোভের মুখে কঠোর সব কোভিড বিধিনিষেধ একে একে শিথিল করতে থাকার মধ্যে সর্বশেষ এই পদক্ষেপ বিতর্কিত জিরো-কোভিড নীতি থেকে চীনের সরে আসারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
তবে বিবিসি জানায়, এ পদক্ষেপ অনেকটাই প্রতীকী। চীনা নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনে এই ট্র্যাকিং অ্যাপ নিষ্ক্রিয় করার তেমন বড় কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ, চীনজুড়ে স্থানীয় ট্র্যাকিং অ্যাপগুলো এখনও চালু আছে।
দেশে কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে মহামারীর শুরু থেকেই ‘জিরো-কোভিড’ নীতি গ্রহণ করেছিল চীন।
কিন্তু সরকারের এ নীতির বিরুদ্ধে সম্প্রতি দেশটির নানা অঞ্চলে সাধারণ মানুষ সড়কে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।
গত মাসে রাজধানী বেইজিংসহ একাধিক নগরীতে বড় ধরনের বিক্ষোভ এবং পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের পর চীন সরকার ‘জিরো-কোভিড’ নীতি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং গত বুধবার থেকে নতুন নীতি কার্যকর হয়।
দেশটিতে যেসব বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো, আগে কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বা রেস্তোরাঁয় যেতে কোভিড ‘নেগেটিভ’ সনদ দেখাতে হত, এখন সেটা লাগবে না।
কোয়ারেন্টিন সেন্টারে গিয়ে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনও বাতিল করা হয়েছে। দেশের ভেতরে ভ্রমণের বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হয়েছে।
এবার দেশটির একশ ৪০ কোটি মানুষের ভ্রমণের ইতিহাস জানতে বানানো নজরদারি অ্যাপটিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
তবে জাতীয় পর্যায়ে বানানো এই অ্যাপটি বন্ধ হলেও চীনের বিভিন্ন নগরীতে এখনো স্থানীয় অ্যাপ একই কাজে ব্যবহার হচ্ছে।
জাতীয় পর্যায়ের ওই অ্যাপটি ফোনের সিগন্যাল ব্যবহার করে কেউ কোথায় যাচ্ছেন, তিনি উচ্চ ঝুঁকির কোনো এলাকায় গেছেন কিনা তা নজরে রাখা হত।
লোকজনকে প্রদেশের ভেতর ভ্রমণ এবং কোনও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হলে ওই অ্যাপে নিজেদের ফোন নম্বর প্রবেশ করাতে হত। যাতে তারা সবুজ তীর চিহ্ন পায়।
গত বুধবার থেকে গ্রহণ করা নতুন নীতিতে দেশের ভেতর ভ্রমণে আর বাধা নেই। তাই অ্যাপটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে অ্যাপ বন্ধ করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ওদিকে, চীনে কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর হাসপাতালগুলোতে জ্বর আক্রান্ত রোগীদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করতে আসার লাইন দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে।
অনেকে সামনে সংক্রমণের বড় ধরনের বিস্ফোরণের আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন।