ব্রাজিলের নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লুলার জয় অনুমোদন দেওয়ার দিনই তারা এ চেষ্টা চালায়।
Published : 13 Dec 2022, 05:12 PM
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর একদল কট্টর সমর্থক রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় অবস্থিত দেশটির কেন্দ্রীয় সদরদপ্তর দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিল।
ব্রাজিলের নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লুলা দ্য সিলভার জয় অনুমোদন দেওয়ার দিন সোমবারই তারা এ চেষ্টা চালায় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বোলসোনারোর সমর্থকরা পুলিশ সদরদপ্তরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। কাছাকছি অনেক বাস ও গাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেয়া হয়।
এ সমর্থকদের বেশিরভাগেরই পরনে ছিল দেশটির জাতীয় ফুলটবল দলের হলুদ জার্সি, অনেকে জাতীয় পতাকা দিয়েও নিজেদের শরীর মুড়ে রেখেছিলেন।
উন্মত্ত এ ডানপন্থি সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ পরে স্টান গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে।
কেন্দ্রীয় পুলিশ পরে জানায়, রাজধানীর নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে সদরদপ্তরের কাছে হওয়া ‘ঝামেলা’ মেটানো হয়েছে।
সহিংস ‘গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ড’ সংগঠিত করার অভিযোগে এক বিচারকের আদেশে বোলসোনারোর এক সমর্থককে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ সদরদপ্তরে এ সহিংস ঘটনা ঘটে।
সোমবারই ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় নির্বাচনী আদালত (টিএসই) ৩০ অক্টোবরের নির্বাচনে বোলসোনারোর প্রতিদ্বন্দ্বী লুলার জয় অনুমোদন করে।
বোলসোনারো দীর্ঘদিন ধরেই ব্রাজিলের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে নিজের অসন্তোষ জানিয়ে এসেছেন। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরও তিনি এখন পর্যন্ত লুলার কাছে হার স্বীকার করেননি। অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরেও কোনো ধরনের বাধা দেননি তিনি।
কিন্তু তার অনেক কট্টর সমর্থক নির্বাচনের ফলের বিরোধিতা করার পাশাপাশি একাধিক মহাসড়ক আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছে এবং সেনাছাউনিগুলোর সামনে অবস্থান নিয়ে লুলা যেন প্রেসিডেন্ট পদে বসতে না পারে তা নিশ্চিতে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটাতে আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার বিকাল শত শত বোলসোনারো সমর্থক প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে ‘সামরিক হস্তক্ষেপ’ লেখা ব্যানার নিয়ে জড়ো হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট তাদের সঙ্গে এক গণপ্রার্থনায় যোগ দিলেও কোনো ভাষণ দেননি।
“কোনো অভিষেক হবে না। বোলসোনারো পুনর্নির্বাচিত হয়েছে, কিন্তু তারা এটা চুরি করেছে। এখন কেবল সেনাবাহিনীই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে,” বলেছেন বোলসোনারো সমর্থক হোসে ত্রিনদাদে।
এদিকে লুলার অন্যতম সহযোগী সেনেটর র্যানডল্ফ রদ্রিগেজ জানিয়েছেন, লুলা ব্রাসিলিয়ার যে হোটেলে উঠেছেন তার আশপাশ বিক্ষোভকারীরা ঘিরে রাখায় তার ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত গেরাল্ডো অ্যাকমিনের শারীরিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
তবে লুলাকে ওই হোটেল থেকে হেলিকপ্টারে সরিয়ে নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে লুলার দল।
ব্রাসিলিয়ার জননিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা লুলার হোটেলের চারপাশের নিরাপত্তা দিচ্ছেন। ব্রাসিলিয়ার কেন্দ্রস্থলের অনেকগুলো সড়ক বন্ধ থাকায় তারা গাড়িচালকদেরকে সেসব এলাকা এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দিয়েছেন।