দোষী সাব্যস্তদেরকে ২ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর মারা যাওয়া শিশুদের প্রতি পরিবারের জন্য ৮০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করেছে আদালত।
Published : 28 Feb 2024, 07:21 PM
ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি ম্যারিয়ন বায়োটেকের দূষিত কফ সিরাপ সেবনে ৬৮ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় উজবেকিস্তানে ২৩ জনকে জেল দিয়েছে আদালত। করা হয়েছে জরিমানাও।
প্রায় ৬ মাস বিচার চলার পর সোমবার দেশটির রাজধানী তাসখন্দ সিটি আদালত এ রায় দিয়েছে। বিচারের শুরুর দিকে ৬৫ জন শিশুর মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছিল। গতমাসে এর সঙ্গে আরও তিন শিশুর মৃত্যুর কথা জানান কৌসুলিরা।
দোষী সাব্যস্তদেরকে ২ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মারা যাওয়া শিশুদের প্রতিটি পরিবারের জন্য ৮০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করেছে আদালত।
কফসিরাপ খেয়ে অক্ষম হয়ে পড়া চার শিশুর জন্যও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দিয়েছে আদালত। ক্ষতির শিকার হওয়া অন্য আরও ৮ শিশুর বাবা-মা পাবেন ১৬ হাজার থেকে ৪০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ।
দোষী সাব্যস্ত ৭ জনের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের এই অর্থ সংগ্রহ করা হবে বলে জানিয়েছে আদালত। অভিযুক্তরা কর ফাঁকি, নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি, অবহেলা, প্রতারণা এবং ঘুষের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
উজবেকিস্তানে কফ সিরাপ বিতরণ করেছিল কুরামাক্স মেডিকেল। কুরামাক্স মেডিকেলের নির্বাহি পরিচালক সিং রাঘবেন্দ্র পার্তারকে সবচেয়ে দীর্ঘ ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আমদানি করা ওষুধের লাইসেন্স দেওয়ার জন্য দায়ী এক সাবেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকেও দীর্ঘদিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
২০২২ সালে ম্যারিয়ন বায়োটেকের প্রস্তুত করা ডক–১ ম্যাক্স কফ সিরাপ সেবনের পর উজবেকিস্তানে শ্বাসকষ্টে ভুগে মারা যায় ৬৮ টি শিশু।
পরীক্ষায় সিরাপে ইথিলিন গ্লাইকোল নামের একটি রাসায়নিকের অতিমাত্রায় উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। শিশুদের মৃত্যুর জন্য এই রাসায়নিকটির অতিমাত্রায় উপস্থিতিকে দায়ী করা হয়।
উজবেকিস্তানে সিরাপ সেবনে ১৮ শিশু মৃত্যুর পরেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও জানিয়েছিল, ম্যারিয়ন বায়োটেকের দুটো সিরাপ অ্যামব্রোনোল এবং ডক–১ ম্যাক্স- এ দূষণ সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি এবং এগুলো নিম্নমানের।
ম্যারিয়ন বায়োটেক তখন এই অভিযোগ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যা বলেছে তার সঙ্গে একমত নয় বলে বিবিসি-কে জানায়।
তবে ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ওই ঘটনার পর ম্যারিয়ন বায়োটেকের ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করে দেয় এবং উত্তর প্রদেশ রাজ্যর খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করে।