অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিস বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবীদ তাদের প্রতিষ্ঠানের ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2023, 04:08 PM
Updated : 19 March 2023, 04:08 PM

অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবীদ অমর্ত্য সেনকে তার বাড়ি থেকে উচ্ছেদের নোটিস পাঠিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

রোববার অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের ঠিকানায় ওই নোটিস পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার।

এ অর্থনীতিবীদের বাড়ি ‘প্রতীচী’র ঠিকানায় পাঠানো নোটিসে বলা হয়েছে, আগামী ২৯ মার্চ ওই বাড়ির জমির ‘বিতর্কিত মালিকানা’ নিয়ে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স হলে শুনানি হবে। যেখানে অর্মত্য নিজে অথবা তার প্রতিনিধিকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

চিঠিটি বিশ্বভারতীর যুগ্ম রেজিস্ট্রার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি বিষয়ক কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে গত শুক্রবার পাঠানো হয়।চিঠিতে কেনো অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের উচ্ছেদ আইন প্রয়োগ করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, অমর্ত্য সেন তাদের প্রতিষ্ঠানের ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন। অমর্ত্য সেন বর্তমানে ভারতে নেই।

শান্তিনিকেতনে তার ওই বাড়ি নিয়ে বিতর্ক বেশ পুরাতন। কিছুদিন আগে এ অর্থনীতিবীদ যখন শান্তিনিকেতনে ছিলেন, সে সময় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তাকে একটি চিঠি পাঠায়।

তাতে বলা হয়, তিনি যেন অতি শিগগির বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই জমি ফেরত দেন।

যা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়। অমর্ত্য সেনের দাবি, তিনি তার বাড়ির জমির কিছু অংশ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিজ নিয়েছেন, আর কিছু অংশ কেনা। এখন কর্তৃপক্ষ জমির মালিকানা নিয়ে মিথ্যা বলছে।

আর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, অমর্ত্য সেনের বাবা আশুতোষ সেনকে এক দশমিক ২৫ ডেসিমেল জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়েছিল। এখন অধ্যাপক অমর্ত্য ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে আছেন। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ওই জমি ফেরত চায়।

কিছুদিন আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্মত্য সেনের বাড়িতে গিয়ে তার হাতে জমির মাপজোক সংক্রান্ত কাগজপত্র তুলে দিয়েছিলেন। এজন্য তিনি নিজেই বিএলআর অফিসে গিয়েছিলেন।

মমতা তখন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যকে বলেছিলেন, ‘‘এভাবে কাউকে অপমান করা যায় না।”

তিনি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছিলেন। কারণ, রাজ্য সরকারই এই জমি বিশ্বভারতীকে দিয়েছে।

বাবা আশুতোষ সেনের পরিবর্তে জমির লিজ নিজের নামে নথিভুক্ত করতে কিছুদিন আগে আবেদন করেছিলেন অমর্ত্য সেন।

বোলপুর ভূমি ও ভূমিসংস্কার দপ্তরে তার শুনানিও হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অমর্ত্য সেন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীরা। কিন্তু দীর্ঘ প্রশ্ন-উত্তরের পরও কোনো মীমাংসায় আসা যায়নি।