ইরানের ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ আন্দোলনের সঙ্গে মাশা আমিনিকে মরণোত্তর শাখারভ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
Published : 10 Dec 2023, 11:13 AM
মাশা আমিনিকে দেওয়া সম্মানজনক একটি মানবাধিকার পুরস্কার গ্রহণ করতে ইরান থেকে তার পরিবার ফ্রান্সে যাওয়ার সময় তাদেরকে বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার তাদের আইনজীবী জানান, মাশার বাবা ও ভাই ফ্রান্সের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার জন্য বিমানবন্দরে গেলে তাদের ফ্লাইটে উঠতে বাধা দেওয়া হয় এবং পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়।
২০২২ সালে সেপ্টেম্বরে ইরানের নীতি পুলিশের নির্যাতনে নিহত হয় ২২ বছরের কুর্দি তরুণী মাশা আমিনি। যার মৃত্যুতে ইরান জুড়ে নারী স্বাধীনতার পক্ষে এবং বাধ্যতামূলক হিজাবের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠেছিল।
টানা কয়েকমাস ধরে চলা ওই আন্দোলন ইরানের ক্ষমতাসীনদের আসন টালমাটাল করে দিয়েছিল। ইরান সরকার কঠোর হাতে ওই বিক্ষোভ দমন করে। সরকারের দমন পীড়নে প্রাণ হারায় প্রায় দুই হাজার বিক্ষোভকারী। আটক হন কয়েক হাজার।
আটকদের মধ্যে কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। এখনো শতাধিক বিক্ষোভকারীর বিচার চলছে।
বিবিসি জানায়, মাশা আমিনিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মানজনক শাখারভ পুরস্কার (মরণোত্তর) প্রদাণ করা হয়েছে। যা গ্রহণ করতে ইরান থেকে তার পরিবার স্ট্রাসবার্গে যাচ্ছিল।
মাশার পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের আইনজীবী আরো জানান, বৈধ ভিসা থাকার পরও তাদের উপর ইরান ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গত অক্টোবর মাসে ইইউ থেকে ঘোষণা করা হয়, তারা মাশাকে (মরণোত্তর) এবং তার মৃত্যু ঘিরে ইরানে গড়ে ওঠা ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ আন্দোলনকে তাদের শীর্ষ মানবাধিকার পুরস্কার প্রদান করছে।
যে পুরস্কার গ্রহণ করতে মাশার মা, বাবা ও ভাই ফ্রান্সে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাদের ফ্লাইটে উঠতে বাধা দিয়ে বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয়।
আইনজীবী বলেন, “ইরানি কর্তৃপক্ষ এর আগে কখনোই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলতে ভুক্তভোগীদের পরিবারকে বাধা দিতে এতটা সক্রিয় হয়ে ওঠেনি।”।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলা ইরানি কর্তৃপক্ষের প্রতি মাশার পরিবারের উপর আরোপ করা ভ্রমণ নিষধাজ্ঞার ‘সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের’ আহ্বান জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে তিনি লেখেন, “ইরানের সাহসী নারীদের সঙ্গে শাখারভ পুরস্কার গ্রহণ করার জন্য আগামী মঙ্গলবার তাদের স্থান হওয়া উচিত স্ট্রাসবার্গের ইউরোপীয় পার্লামেন্টে।
“সত্যকে কখনো চুপ করিয়ে রাখা যায় না।”
এ বছর সেপ্টেম্বরে মাশার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর দিন ইরানি কর্তৃপক্ষ তার বাবা আমজাদকে আটক করে রেখেছিল। সেইসঙ্গে মেয়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কোনো আয়োজন করতেও নিষেধ করা হয়েছিল।
তবে সারা বিশ্বে হাজার হাজার মানুষ মাশার মৃত্যুবার্ষিকীতে সড়কে নেমে বিক্ষোভ করেছে।
আরও পড়ুন:-