সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ইরানপন্থি বাহিনীগুলোর স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে সিরিয়ার যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাজ্যভিত্তিক গোষ্ঠী ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’।
সিরিয়ায় কয়েক বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানপন্থি বাহিনীগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে প্রাণঘাতী পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা।
বৃহস্পতিবার সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় হাসাকা শহরের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর ঘাঁটিতে এক ড্রোন হামলায় এক মার্কিন ঠিকাদার নিহত ও আরেকজন আহত এবং আরও পাঁচ মার্কিন সেনা আহত হয়। তিনটি ড্রোন দিয়ে হামলাটি চালানো হলেও দুটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয় কিন্তু অপরটি ঘাঁটিতে আঘাত হানে। এই ড্রোনগুলোর উৎস ইরান বলে মূল্যায়ন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর।
এর জবাবে ওই দিন রাতেই মার্কিন এফ-১৫ জঙ্গি বিমানগুলো ইরানের ইসলামিক রেভোলুশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি) এর সঙ্গে সম্পর্কিত গোষ্ঠীগুলোর ব্যবহৃত স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায় বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
সিরিয়ান অবজারভেটরি জানিয়েছে, মার্কিন হামলায় যে ১৯ জন নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে তিনজন সিরীয় সেনা, ১১ জন সরকারপন্থি মিলিশিয়া এবং পাঁচজন সিরিয়ার সরকারপন্থি বিদেশি যোদ্ধা।
অবজারভেটরির প্রধান রামি আব্দেল রহমান ওই বিদেশি যোদ্ধাদের জাতীয়তা নির্দিষ্ট করে জানাননি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স স্বতন্ত্রভাবে নিহতের সংখ্যা যাচাই করতে পারেনি।
দুই পক্ষের মধ্যে প্রাথমিক এসব ঘটনার পর আরও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকালে সিরিয়ার আল ওমর তেল ক্ষেত্রের কাছে একটি মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা হয়, এতে আরেক মার্কিন সেনা আহত হয়েছেন বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর জবাবে সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলের আরও কয়েকটি এলাকায় রকেট হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, আমেরিকানদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র আরও ‘জোরালো পদক্ষেপ’ নিতে পারে।
সিরিয়ায় ১২ বছর ধরে চলা যুদ্ধে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ইরানের কাছ থেকে বড় ধরনের সমর্থন পেয়ে আসছেন। লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী এবং তেহরানপন্থি ইরাকি গোষ্ঠীগুলোসহ ইরানের ছায়া বাহিনীগুলো সিরিয়ার পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে এবং রাজধানী দামেস্কের আশপাশের বিশাল এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
সিরিয়ায় ইরানের বাড়তে থাকা প্রভাবে উদ্বিগ্ন ইসরায়েল তেহরানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর অবস্থানে প্রায়ই বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালেও যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের হামলা অপেক্ষাকৃত বিরল ঘটনা।
ইরানের ড্রোন কর্মসূচী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সতর্কতা জানাতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান সেনাবাহিনীর জেনারেল এরিক কুরিলা বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের আর্মড সার্ভিস কমিটির কাছে দেওয়া এক সাক্ষ্যে ইরানের ড্রোন বহরের বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
তিনি বলেছেন, “ইরানের শাসকগোষ্ঠী এখন ওই অঞ্চলের বৃহত্তম ও সবচেয়ে সক্ষম মানুষবিহীন আকাশযান শক্তির অধিকারী।”
আরও খবর: