সিরিয়ায় মার্কিন ঠিকাদার নিহতের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সিরিয়ায় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর অবস্থানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2023, 07:10 AM
Updated : 24 March 2023, 07:10 AM

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে জোট বাহিনীর একটি ঘাটির কাছে মার্কিন সেনাদের ওপর প্রাণঘাতী ড্রোন হামলার পর পাল্টা আঘাত হেনেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার রাতে সিরিয়ায় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর অবস্থানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে পেন্টাগন দুটি হামলার কথাই প্রকাশ করে।

তারা জানিয়েছে, সিরিয়ার স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুর প্রায় ১টা ৩৮ মিনিটে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় হাসাকা শহরের কাছে জোট বাহিনীর একটি ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা চালানো হয়।

একমুখি ওই ড্রোন হামলায় একজন মার্কিন সামরিক ঠিকাদার নিহত ও অপর একজন আহত এবং আরও পাঁচ মার্কিন সেনা আহত হয়।

একমুখি ওই হামলাকারী ড্রোনটির উৎস ইরান বলে মার্কিন গোয়েন্দাদের মূল্যায়ন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশনায় ইরানের ইসলামিক রেভোলুশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি) এর সঙ্গে সম্পর্কিত গোষ্ঠীগুলোর ব্যবহৃত স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলাগুলো চালানো হয়েছে।

এক বিবৃতিতে অস্টিন বলেন, “আইআরজিসির সঙ্গে সম্পর্কিত গোষ্ঠীগুলো সিরিয়ায় জোট বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে। ওইসব হামলা ও আজকের হামলার প্রতিক্রিয়ায় বিমান হামলাগুলো চালানো হয়েছে। কোনো গোষ্ঠী আমাদের সেনাদের ওপর হামলা চালিয়ে শাস্তি থেকে রেহাই পাবে না।”

মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, আহত ওই ঠিকাদার ও তিন সেনাকে চিকিৎসার জন্য ইরাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেখানে অবশিষ্ট ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইরত মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর মেডিকেল স্থাপনা রয়েছে।

আহত অপর দুই মার্কিন সেনাকে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় ওই ঘাঁটিতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে পেন্টাগন জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের ওপর প্রায়ই ড্রোন হামলার চেষ্টা হয়ে থাকলেও একজন নিহত ও ছয়জন আহত হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত অস্বাভাবিক। এটি ইতোমধ্যেই নাজুক হয়ে থাকা ওয়াশিংটন ও তেহরানের সম্পর্কে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনাদের তত্ত্বাবধানকারী সেনাবাহিনীর জেনারেল এরিক কুরিলার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো মার্কিন সেনাদের ওপর প্রায় ৭৮ বার হামলা চালিয়েছে।

বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের আর্মড সার্ভিস কমিটির কাছে দেওয়া এক সাক্ষ্যে কুরিলা ইরানের ড্রোন বহরের বিষয়ে সতর্ক করেছেন।

তিনি বলেছেন, “ইরানের শাসকগোষ্ঠী এখন ওই অঞ্চলের বৃহত্তম ও সবচেয়ে সক্ষম মানুষবিহীন আকাশযান শক্তির অধিকারী।”

জানুয়ারিতে সিরিয়ার আল-তানফ অঞ্চলে মার্কিন ঘাঁটিতে তিনটি ড্রোন হামলা চালানো হয়। মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, দুটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হলেও অবশিষ্টটি ওই কম্পাউন্ডে আঘাত হানে আর তাতে সিরিয়ান ফ্রি আর্মি বাহিনীর দুই সদস্য আহত হন।

মার্কিন কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, ড্রোন ও রকেট হামলাগুলো সিরিয়ার ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের কাজ।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ইরান ও রাশিয়ার সমর্থনের ওপর নির্ভর করছেন এবং দেশটিতে থাকা মার্কিন সেনাদের দখলদার হিসেবে দেখেন।