উপসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে এমনকি জলবায়ু সম্মেলন কপ২৮ আয়োজক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতেও গ্যাস ফ্লেয়ারিং চলছে।
Published : 28 Nov 2023, 06:20 PM
তেল খননের সময় বর্জ্য গ্যাস পোড়ানো বা গ্যাস ফ্লেয়ারিংয়ের সময় নির্গত বিষাক্ত গ্যাসের দূষণে মধ্যপ্রাচ্যে লাখ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে। আগে যতটা আশঙ্কা করা হয়েছিল, তার চেয়েও বেশি মানুষ এখন বিপন্ন অবস্থায় আছে বলে বিবিসি-র এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
উপসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে এমনকি জলবায়ু সম্মেলন কপ২৮ আয়োজক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতেও (ইউএই) ফ্লেয়ারিং অর্থাৎ, খনি থেকে তেল বের করার সময় বর্জ্য গ্যাস পোড়ানো চলছে।
নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে যে, গ্যাস ফ্লেয়ারিংয়ের কারণে দূষণ শত শত মাইলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে এবং গোটা অঞ্চল জুড়ে বাতাসের গুণগত মান খারাপ হচ্ছে।
আগামী বৃহস্পতিবারেই জাতিসংঘের কপ২৮ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলন আয়োজন করতে চলেছে আরব আমিরাত। এমন একটি সময়েই বিষাক্ত গ্যাসের এই দূষণ ছড়ানোর ঘটনা সামনে এল।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০ বছর আগেই নিয়মিত ফ্লেয়ারিং নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা গেছে, সেখানে এখনও বর্জ্য গ্যাস পোড়ানো চলছে। আরব আমিরাতের বাসিন্দারা এবং এর প্রতিবেশী দেশগুলোর মানুষেরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকার পরও ফ্লেয়ারিং বন্ধ হয়নি।
বিবিসি আরবি সার্ভিসের বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, গোটা অঞ্চলটিতে বিষাক্ত গ্যাস এখন শত শত কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে।
গবেষণার অংশ হিসাবে ইরাক, ইরান এবং কুয়েতের তেল কূপগুলোর দূষণ বিশ্লেষণ করে দেখা হয়। তবে জড়িত দেশগুলো হয় মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বা প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
তেল খনন এলাকাগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালনাকারী বিপি এবং শেলের মতো তেল কোম্পানিগুলো- যেখানে ফ্লেয়ারিং করা হয়- তারা বলছে, গ্যাস ফ্লেয়ারিং কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
ফ্লেয়ারিংয়ের কারণে যেসব পদার্থ দূষণ ঘটায় তার মধ্যে আছে- পিএম২.৫, ওজোন, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, এবং বেনজো পাইরিন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-সহ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাতাসে এসব পদার্থের অনবরত উচ্চ মাত্রা়র দূষণ ঘটলে স্ট্রোক, ক্যান্সার, হাঁপানি এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবল ঝুঁকি রয়েছে।
তাছাড়া, গ্যাস ফ্লেয়ারিং বিশ্ব উষ্ণায়ন সৃষ্টিকারী গ্রিনহাউজ গ্যাস কার্বন ডাই অক্সাইড এবং মিথেনের নির্গমনেরও প্রধান একটি উৎস।