গ্রেপ্তারকাণ্ডের জন্য সেনাপ্রধানকে দুষলেন ইমরান

ভাংচুর, সহিংসতার সঙ্গে যোগসাজশ থাকার কথাও অস্বীকার করেছেন তিনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2023, 10:42 AM
Updated : 13 May 2023, 10:42 AM

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক ই ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খান গত সপ্তাহে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তাকে ‘তুলে নেওয়ার’ ঘটনার পেছনে সেনাপ্রধানকে দায়ী করেছেন।

ওই গ্রেপ্তারকাণ্ডকে ঘিরে পাকিস্তানের একাধিক শহরে যে ভাংচুর, সহিংসতা হয়েছে তার সঙ্গে যোগসাজশ থাকার কথাও তিনি অস্বীকার করেছেন।

শুক্রবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে স্বল্প সময়ের আলাপচারিতায় তিনি এসবসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন বলে জানিয়েছে ডন।

নিরাপত্তা বাহিনী ইমরানের বিপক্ষে আর বিচার বিভাগ ইমরানের পক্ষে কিনা, বিবিসির এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনী নয়। একজন। তিনি হচ্ছেন- সেনাপ্রধান। সেনাবাহিনীতে কোনো গণতন্ত্র নেই। যা ঘটছে তাতে সেনাবাহিনীর মর্যাদাহানি হচ্ছে।

“তিনি (সেনাপ্রধান) দুশ্চিন্তায় আছেন, আমি ক্ষমতায় গেলে তাকে বরখাস্ত করবো। আমি যে তা করবো না, আমার দিক থেকে সেই বার্তা দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। যা ঘটছে, তা তার সরাসরি নির্দেশে ঘটছে। তিনি এই ভাষ্যে নিশ্চিত যে, আমি জিতলে আমি তাকে বরখাস্ত করবো।”

সরকার তার দলকে ‘ভিকটিম বানাচ্ছে’ অভিযোগ তুলে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গত এক বছরে ৫ হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

দুটি হত্যাচেষ্টার হাত থেকে বেঁচেছেন জানিয়ে ইমরান বলেন, তিনি কেবল তদন্ত চেয়েছেন। কিন্তু সেই দাবি প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় তিনি দুঃখ পেয়েছেন।

অন্য কোনো রাজনীতিককে যে সুবিধা সুপ্রিম কোর্ট কখনোই দেয়নি, ইমরানকে সেই সুবিধা দেওয়া হয়েছে কিনা, গণমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট উর্দুর এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তানের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাকে সুবিধা দেওয়ার অস্বীকার করে বলেন, “আমি এখনও ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আছি। আমাকে গ্রেপ্তারের কোনো যুক্তি নেই তাদের কাছে। আমাকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। জেলে নেওয়ার পর তারা প্রথমবার আমাকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখায়। এটা একমাত্র সেখানে হয়, যেখানে জঙ্গলের আইন বলবৎ থাকে আর যেখানে সেনাবাহিনী লোকজনকে তুলে নেয়।”

“কোথায় আইন? কোথায় পুলিশ? মনে হচ্ছে দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে,” ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ইমরান।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টে বলা কথা পুনর্ব্যক্ত করে ইমরান বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের পর যা যা ঘটেছে সে সম্বন্ধে তিনি একেবারেই কিছু জানতেন না।

দুই দিনের বিক্ষোভে জনা চল্লিশেক লোক মারা পড়েছে, এমনটা জানতে পেরেছেন বলেও জানান তিনি।

ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো- এনএবি’র হেফাজতে থাকাকালীন ঘটে যাওয়া বিভিন্ন কিছুর জন্য দুঃখ প্রকাশ করে পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, “কেবল একজনের জন্য সেনাবাহিনীর মর্যাদাহানি হচ্ছে।”

অনানুষ্ঠানিক এ কথাবার্তায় ইমরান তাকে গ্রেপ্তারের সময় তার মাথায় ব্যাটন দিয়ে আঘাত করারও অভিযোগ আনেন। এনএবির হেফাজতে থাকার সময় তার সঙ্গে যে আচরণ হয়েছিল তাকে ‘ন্যায্য’ বলেও অভিহিত করেন তিনি।

“সেসব ঘটনার জন্য আমি কীভাবে দোষী হবো, যেখানে আমি ছিলামই এনএবির হেফাজতে?,” দেশজুড়ে হওয়া ভাংচুর, ধর্মঘট, রাষ্ট্রীয় এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের জন্য তাকে দায়ী করে সমালোচকদের মন্তব্যের জবাবে বলেন ইমরান।

পিটিআই নেতা মুশাররাত জামশেদ চিমার সঙ্গে টেলিফোনে হওয়া কথোপকথন ফাঁস হওয়া প্রসঙ্গে জিও টিভির এক প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রেপ্তারের পর আদালত তাকে স্ত্রী বুশরা বিবির সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দিলে তিনি চিমাকে ফোন করেন।

স্ত্রীকে বাদ দিয়ে চিমাকে কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, স্ত্রী ফোন না ধরায় তিনি মুশাররাতকে কল করেন।