ঝুঁকি জেনেও গাজার উত্তরে ফিরে যাচ্ছেন অনেক ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ

খাবার, বিশুদ্ধ পানি আর আশ্রয়ের অভাবে গাজার দক্ষিণেও পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে ইসরায়েলের বিমান হামলা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2023, 08:13 AM
Updated : 24 Oct 2023, 08:13 AM

ইসরায়েলের তীব্র বিমান হামলা, সেইসঙ্গে দক্ষিণ দিকে সরে যাওয়ার নির্দেশ; সব কিছু উপেক্ষা করে গাজার উত্তর প্রান্তে নিজ বাড়ি ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন সপ্তাহ খানেক আগে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিরা।

কারণ, যে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে তারা দক্ষিণ দিকে ছুটেছিলেন সেটা তারা পাননি। বরং সেখানেও পরিস্থিতি ভয়াবহ, হচ্ছে হামলা।

নিজেদের নিরাপত্তার জন্য গত সপ্তাহে গাজা সিটি এবং উত্তরের অন্যান্য অঞ্চল থেকে প্রায় ১১ লাখ ফিলিস্তিনি চলে গেছেন বলে জানিয়েছিল ইসরায়েল।

কিন্তু এখন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, উত্তর থেকে দক্ষিণে আসা গাজার বাসিন্দারা খাবার, পানি ও আশ্রয়ের অভাব নিদারুণ মানবিক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন।

হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকেও দক্ষিণের খান ইউনিস নগরীতে রোববার ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৪৩৬ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত দুই সপ্তাহে গাজার প্রায় ১৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

খান ইউনিসে অবস্থান করা বিবিসি প্রতিনিধি বলেন, গত কয়েক দিনে সেখানে ৬০ থেকে ৭০ হাজার শরণার্থী এসেছে। নগরীতে তিলধারণের জায়গা নেই।

অনেকে হাসপাতাল, ক্লাব, রেস্তোরাঁতে আশ্রয় নিয়েছেন। কারো কারো কপালে সেটাও জোটেনি। তারা খোলা আকাশের নিচে কোনো মতে বেঁচে আছেন।

গাজায় জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউ এর পরিচালক টমাস হোয়াইট বিবিসিকে বলেন, বেশিরভাগ বাস্তুচ্যুত মানুষ দিনে মাত্র এক লিটার পানি আর দুটো ছোট রুটি খেয়ে জীবন ধারণ করছেন।

“মানবিক এই সংকট, সঙ্গে দক্ষিণের বেসামরিক এলাকাগুলোতে অব্যাহত বিমান হামলার অর্থ, কেউ কেউ উত্তরে ফিরে যেতে শুরু করেছে।

“মূলত, লোকজন উত্তরে তাদের সব কিছু ফেলে রেখে এসেছে-তাদের বাড়িঘর, ব্যবসা, তাদের জীবন। দক্ষিণে এসে একটি আশ্রয় খুঁজে পেতেও রীতিমত যুদ্ধ করতে হচ্ছে, খাবার নেই, বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেকেই অনিরাপদ পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে। আসলে দক্ষিণের পরিস্থিতিও মারাত্মক রূপ নিয়েছে।”

খান ইউনিসে পালিয়ে আসা রিয়াদ জাবাস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “আমাদের গাজা সিটি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, খান ইউনিস নিরাপদ এলাকা, এখন পুরো গাজায় কোথাও আসলে নিরাপদ স্থান নেই।”

এদিকে, শনিবারও ইসরায়েলের বিমান থেকে গাজা সিটিতে লিফলেট ফেলা হয়েছে বলে জানায় বিবিসি। যে লিফলেটে দেশটির সেনাবাহিনী হুঁশিয়ার করে বলেছে, যে ওয়াদি গাজা নদীর দক্ষিণে চলে না যাবে তাকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের একজন সদস্য বলে বিবেচনা করা হতে পারে’।

Also Read: গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ‘২৪ ঘণ্টায় নিহত ৪৩৬’