“আমাদের বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিগুলোর আমেরিকায় ফিরে আসার সময় এসেছে,” বলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
Published : 11 Feb 2025, 09:44 AM
বাণিজ্য বাধার দেয়াল আরো উঁচু করলেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প; যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা সব ধরনের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের নির্দেশ দিলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে ধাতু সরবরাহকারী সবচেয়ে বড় দেশ কানাডা ও অন্যান্য দেশের কিছু রাজনৈতিক নেতার পাল্টা পদক্ষেপের হুঁশিয়ারির মধ্যেই শুল্ক আরোপের এ ঘোষণা দেওয়া হল, যা যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা ধাতুর দাম বাড়িয়ে তুলবে।
বিবিসি লিখেছে, এই পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিনির্ভর ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও ট্রাম্প বলেছেন, তার পরিকল্পনায় দেশীয় উৎপাদন বাড়বে।
তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ৪ মার্চ থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এ নিয়মের কোনো বত্যয় হবে না।
ট্রাম্পের ভাষায়, তিনি নিয়ম ‘সহজ’ করেছেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং আমেরিকাকে ফের ‘ধনী বানানোর পদক্ষেপের শুরু’।
“আমাদের দেশের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমেরিকায় তৈরি হওয়া দরকার, বিদেশের মাটিতে নয়।”
শুল্কের কারণে ভোক্তাদের বাড়তি দাম গুনতে হবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “শেষ পর্যন্ত এটি সস্তা হবে।”
তিনি বলেন, “আমাদের বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিগুলোর আমেরিকায় ফিরে আসার সময় এসেছে…এটি অনেক কিছুর মধ্যে প্রথম।”
ফার্মাসিউটিক্যালস ও কম্পিউটার চিপের ওপরও শুল্ক আরোপ করা হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম ইস্পাত আমদানিকারক দেশ। তাদেরকে এই ধাতু সবচেয়ে বেশি সরবরাহ করে কানাডা, ব্রাজিল ও মেক্সিকো।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা অ্যালুমিনিয়ামের ৫০ শতাংশের বেশি ছিল কানাডার। ফলে শুল্ক কার্যকর হলে তা যে কানাডার ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে, তা সহজেই অনুমেয়।
কানাডার বেশিরভাগ ইস্পাত উৎপাদন হয় যে প্রদেশে, সেই অন্টারিওর মুখ্যমন্ত্রী ডাগ ফোর্ড ‘ক্রমাগত গোলপোস্ট পরিবর্তন এবং ক্রমাগত বিশৃঙ্খলা’ সৃষ্টি করে অন্টারিওর অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ করেছিলেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
কানাডীয় ইস্পাত প্রস্তুতকারকদের লবি গ্রুপ কানাডা সরকারকে ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির শীর্ষস্থানীয় এমপি কোডি ব্লোইস বলেছেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক কমানোর উপায় খুঁজছে।
ট্রাম্পের আনুষ্ঠানিক আদেশের আগে তিনি বিবিসি নিউজআওয়ারকে বলেন, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী অংশীদারত্বের সম্পর্কেকে ট্রাম্প পুরোপুরি উল্টে দিচ্ছেন।
এদিকে ট্রাম্পের শুল্কের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ইস্পাত প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বেড়েছে সোমবার। ক্লিভল্যান্ড-ক্লিফসের দাম চড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের দামেও উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে।
বাকি বাজারের বেশিরভাগ অংশ চুপচাপ। শুল্ক ঘোষণার পর তা স্থগিত বা ছাড় দেওয়ার নজির থাকায় ট্রাম্প এবারের পরিকল্পনাকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে ইস্পাতের উপর ২৫ শতাংশ এবং অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন, তবে শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং মেক্সিকোসহ অনেক দেশের জন্য শুল্ক ছাড় নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।