Published : 11 Mar 2024, 02:30 PM
ইন্দোনেশিয়ার অভ্যন্তরীণ এয়ারলাইন বাতিক এয়ার এর একটি ফ্লাইটের দুই জন পাইলটই উড়োজাহাজ মাঝ আকাশে থাকা অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়েন। এক মিনিট বা দুই মিনিট নয়, তারা টানা ২৮ মিনিট ঘুমিয়ে ছিলেন।
ঘুমিয়ে পড়া দুইজন পাইলটই পুরুষ। তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। গত ২৫ জানুয়ারি সুলাউইসি থেকে রাজধানী জাকার্তায় যাওয়ার পথে ওই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ওই দুই পাইলটের একজন সদ্য যমজ সন্তানের বাবা হয়েছে। তাদের যত্নে সহায়তা করতে গিয়ে তিনি ঠিকমত বিশ্রাম নিতে পারেননি, ক্লান্ত ছিলেন।
দুই পাইলটই ঘুমিয়ে পড়ায় এয়ারবাস এ৩২০ সেটির নির্দিষ্ট পথ থেকে সরে গিয়েছিল। তবে বড় কোনো বিপদ ছাড়াই সেটি নিরাপদে অবতরণ করেছে এবং ১৫৩ আরোহীর সবাই অক্ষত থেকেছেন।
ফ্লাইটটির ৩২ বছর বয়সী পাইলট বলেন, যাত্রা শুরু করার প্রায় আধাঘণ্টা পর তিনি কো-পাইলটকে উড়োজাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিতে বলেন। কারণ, তার বিশ্রামের প্রয়োজন ছিল। ২৮ বছর বয়সী কো-পাইলট নিয়ন্ত্রণ নিতে সম্মত হয়েছিলেন বলে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়। কিন্তু অসাবধানতাবশত কো-পাইলটও ঘুমিয়ে পড়েন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পাইলটের স্ত্রী একমাস আগে যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তাদের যত্ন নিতে পাইলটকে সাহায্য করতে হয়।
বিবিসি জানায়, জাকার্তা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল তাদের সর্বশেষ ট্রান্সমিশন রেকর্ড করার পর বাতিক এয়ারের ওই ফ্লাইটের ককপিটের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে যায়। কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি। তাদের রেডিও ২৮ মিনিট নিশ্চুপ হয়েছিল। যতক্ষণ পর্যন্ত না পাইলট জেগে ওঠেন।
পাইলট জেগে উঠে দেখেন তার কো-পাইলটও ঘুমিয়ে আছেন এবং উড়োজাহাজটি সেটির নির্দিষ্ট পথ থেকে খানিকটা সরে গেছে। তখন তিনি জাকার্তার কন্ট্রোল রুম থেকে করা কলের জবাব দেন এবং উড়োজাহাজটি নিরাপদে অবতরণ করান।
ফ্লাইট পরিচালনার আগে পাইলটদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করা হয়। ওই দুই পাইলটের শারীরিক অবস্থাও পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং তারা ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সুস্থ ছিলেন। তাদের রক্তচাপ এবং হৃদযন্ত্রের গতি স্বাভাবিক ছিল। অ্যালকহল পরীক্ষার ফলাফলও ‘নেগেটিভ’ এসেছিল।
শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে পাইলট পুরোপুরি বিশ্রাম গ্রহণ করেছেন কিনা তা যাচাই করা বেশ কঠিন বলে বিবিসিকে বলেছেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ আলভিন লি।
কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার জন্য বাতিক এয়ার কে ‘কঠোর তিরস্কার’ করেছে। ইন্দোনেশিয়ার এয়ার ট্রান্সপোর্টের প্রধান এম ক্রিস্টি এনডাহ মুরনি বলেছেন, বাতিক এয়ারের তাদের ক্রুদের পর্যাপ্ত বিশ্রামের উপর আরো অধিক নজর দেওয়া উচিত।
জবাবে বাতিক এয়ার বলেছে, তারা ‘পর্যাপ্ত বিশ্রামের নীতি অনুসরণ করেই’ পরিচালিত হয় এবং তারা ‘আকাশ পথে সব ধরণের নিরাপত্তা কার্যকরে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ’।
২০১৯ সালে বাতিক এয়ারের একজন পাইলট মাঝ আকাশে অজ্ঞান হয়ে পড়লে ফ্লাইট জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়েছিল।