শুক্রবার সন্ধ্যার পর ধুলি ঝড়ের কারণে ফ্লাইট বিলম্বিত হয়, বিমানবন্দরে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়ের কারণেই তৈরি হয় বিশৃংখলা।
Published : 12 Apr 2025, 01:36 PM
ভারতের দিল্লিতে ধুলিঝড় ও দমকা হাওয়ার কারণে ইন্দিরা গান্ধি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মারাত্মক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়; অন্তত ২০৫টি ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে ছাড়ে, আর অন্তত ৫০টি ফ্লাইট গন্তব্য বদল করে অন্যত্র অবতরণ করে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
বেশিরভাগ ফ্লাইট গড়ে এক ঘন্টা দেড়িতে ছাড়ে, জানায় তারা।
বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএনআইকে এক বলেন, “ধুলিঝড়ের পর অনেক ফ্লাইট বাতিল বা অন্যত্র অবতরণ করানো হয়। এ কারণে যাত্রীরা ব্যাপকভাবে ভোগান্তির মুখে পড়েন। অন্যত্র পাঠানো ফ্লাইটগুলো ফের দিল্লিতে আসতে দেরি করে, এতে বিমানবন্দরে যাত্রীদের ভিড় বাড়ে।”
এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগোর মতো বিমান সংস্থাগুলো ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে সতর্কতা জানালেও বহু যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে।
এক যাত্রী এনডিটিভিকে বলেন, “আমাদের শ্রীনগর থেকে দিল্লি হয়ে মুম্বাই যাওয়ার ফ্লাইট ছিল। সন্ধ্যায় দিল্লিতে নামার কথা থাকলেও ধুলিঝড়ের কারণে বিমানটি চন্ডিগড়ে অবতরণ করে। রাত ১১টায় আমরা দিল্লিতে ফিরি। এরপর মধ্যরাতে আরেকটি ফ্লাইটে উঠি, কিন্তু সেখানে ৪ ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর আবার নামিয়ে আনা হয়, নতুন করে নিরাপত্তা পরীক্ষাও করতে হয়। এখন সকাল ৮টা, এখনও আমরা বিমানেই উঠতে পারিনি।”
একই বিমানের ৭৫ বছর বয়সী হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী এক নারী বলেন, “১১টা থেকে এখানে বসে আছি, ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আমরা আটকে আছি।”
এক্সে পোস্ট করা বিভিন্ন ছবি ও মন্তব্যে যাত্রীদের ক্ষোভ স্পষ্ট।
একজন এক্স ব্যবহারকারী লিখেছেন, “সবচেয়ে বিশৃঙ্খল, ভুল তথ্য দেওয়া তথাকথিত ‘বিশ্বমানের’ বিমানবন্দর-নয়াদিল্লি। বাসস্ট্যান্ডের চেয়েও খারাপ।”
আরেকজন লিখেছেন, “কলকাতা থেকে দিল্লিগামী ইন্ডিগোর ফ্লাইট ৬ বার সময় পরিবর্তন করেছে। ইন্ডিগো কি যাত্রীদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করতেই পারে? আমাদের ইতোমধ্যে ৬ ঘন্টা দেরি হয়ে গেছে।”
অন্য এক ভুক্তোভোগী লিখেছেন, “ফ্লাইট এখনও ছাড়েনি। বোর্ডিং শেষে যাত্রীদের ২ ঘণ্টা বসিয়ে রেখেছে। নিয়ম অনুযায়ী ২ ঘণ্টার বেশি দেরি হলে রিফ্রেশমেন্ট দিতে হয়, সেটাও দেওয়া হয়নি।”
ক্ষুব্ধ এক যাত্রী বলেন, ১৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দিল্লি বিমানবন্দরে আটকে আছেন তিনি। এয়ার ইন্ডিয়াকে দোষারোপ করে ওই যাত্রী বলেন, “যাত্রীদের প্রতি আপনাদের কোনও দায়বদ্ধতা নেই। এমন হলে এই পদে থাকার যোগ্যতাই নেই আপনাদের।”
এদিকে, যাত্রীদের প্রতিক্রিয়ায় এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, “আমাদের বিমানবন্দর টিম দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছে। ধৈর্য ধরার অনুরোধ করছি।”
ইন্ডিগো ও স্পাইসজেটও জানিয়েছে, আবহাওয়ার কারণে তাদের কিছু ফ্লাইট বিলম্বিত হতে পারে।
অন্যদিকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও যাত্রীদের সতর্ক করেছে, এবং জানিয়েছে, আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় বিমানের সময় সূচিতে প্রভাব পড়েছে। যে কোনও জিজ্ঞাসার জন্য নিজ নিজ বিমান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছে তারা।