উৎক্ষেপণ ব্যর্থ, ফ্ল্যাগশিপ এইচ৩ রকেট ধ্বংসে বাধ্য হল জাপান

এই ব্যর্থ উৎক্ষেপণ জাপানের এরোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (জাক্সা) জন্য বড় ধরনের ধাক্কা, বলছেন পর্যবেক্ষকরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2023, 11:32 AM
Updated : 7 March 2023, 11:32 AM

ঠিকঠাকভাবে উৎক্ষেপণ না করতে পেরে বাধ্য হয়ে নিজেদের নতুন একটি রকেট ধ্বংস করে দিয়েছে জাপান।

এই ঘটনা এলন মাস্কের স্পেসএক্স নেতৃত্বাধীন মহাকাশ যানের বাজারে টোকিওর শক্ত অবস্থান করে নেওয়ার চেষ্টায় বাধা হয়ে দাঁড়াল।

বিবিসি জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিট পর দ্বিতীয় পর্যায়ের ইঞ্জিন চালু না হওয়ায় জাপানের মহাকাশ সংস্থা নিজেই নিজেকে ধ্বংস করে দিতে রকেটটিকে নির্দেশ দেয়।

এই ব্যর্থ উৎক্ষেপণ জাপানের এরোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (জাক্সা) জন্য বড় ধরনের ধাক্কা, বলছেন পর্যবেক্ষকরা।

জাপানের সরকার ব্যর্থ এ পরীক্ষাকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে।

এই এইচ৩ রকেট তিন দশকের মধ্যে জাপানের নকশা করা প্রথম মাঝারি মাত্রার ওজন নিতে সক্ষম রকেট।

পৃথিবীর কক্ষপথে বাণিজ্যিক ও সরকারি স্যাটেলাইট পাঠাতে একে স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ এর কমদামি বিকল্প ভাবা হচ্ছিল।

মঙ্গলবার প্রকৌশলীদের লক্ষ্য ছিল, ৫৭ মিটার দীর্ঘ ওই রকেটে করে একটি নজরদারি স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো। এই এএলওএস-৩ স্যাটেলাইট উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ শনাক্তে সক্ষম।

কিন্তু উৎক্ষেপণের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে এইচ৩ রকেটে বেগ হ্রাস পেতে দেখে প্রকৌশলীরা রকেটটি যেন নিজেই নিজেকে ধ্বংস করতে পারে এমন একটি নির্দেশ পাঠাতে বাধ্য হন।

ত্রুটিপূর্ণ রকেট বুস্টারের কারণে লঞ্চ প্যাড থেকে বের হতে না পারায় ফেব্রুয়ারিতেও ওই রকেটটির উৎক্ষেপণ বাতিল করতে হয়েছিল।

“আগেরবারের মতো বাতিল বা স্থগিত নয়, এবার উৎক্ষেপণ পুরোপুরি ব্যর্থই হয়েছে। এই ঘটনা জাপানের ভবিষ্যৎ মহাকাশ নীতি, মহাকাশ বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গুরুতর প্রভাব ফেলবে,” রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ নীতির অধ্যাপক হিরোতাকা ওয়াতানাবে।

কেন ইঞ্জিনটি ঠিকঠাক চালু করা যায়নি, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন জাপানের বিজ্ঞানমন্ত্রী কেইকো নাগাওকা।

জনগণ ও সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের আশা পূরণ না করতে পারায় ক্ষমা চান তিনি এবং এই ব্যর্থ উৎক্ষেপণের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেন।

কমদামি ইঞ্জিন ও থ্রি-ডি প্রিন্টারে বানানো যন্ত্রপাতির কারণে জাপান এই এইচ৩ রকেটকে ফ্যালকন ৯ এর ‍তুলনায় লাভজনক রকেট হিসেবে দুনিয়ার কাছে হাজির করেছিল।

এবারের উৎক্ষেপণ সফল হলে তারা আগামী দুই দশক প্রতিবছর ৬ বার করে এইচ৩ রকেট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছিল, বলেছিল জাক্সা।

জাপান মহাকাশ গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করেছে, তাদের বিস্তৃত মহাকাশ কর্মসূচির মধ্যে চাঁদে নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনাও আছে।