দুর্গম জায়গার এক বাড়িতে আটকা পড়ে থাকা দুই নারী ও দুই পুরুষকে জীবিত উদ্ধার করেছেন সেনাবাহিনীর উদ্ধারকর্মীরা।
Published : 02 Aug 2024, 07:26 PM
ভারতের কেরালা রাজ্যের পার্বত্য জেলা ওয়েনাড়ের ভূমিধস কবলিত প্রত্যন্ত এলাকার একটি বাড়ি থেকে ঘটনার তিন দিন পর শুক্রবার চারজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু স্থাপন করার পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভারী যন্ত্রপাতি পাঠানো শুরু হয়, এতে তল্লাশি অভিযানে গতি আসলে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
মঙ্গলবার ভোরে ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য কেরালা রাজ্যের ওয়েনাড় জেলায় ভারি বৃষ্টির মধ্যে ব্যাপক ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এতে পার্বত্য এলাকার অন্তত চারটি গ্রাম হাজার হাজার টন পাথর ও কাদার স্তূপের নিচে চাপা পড়ে। ঘুমের মধ্যেই গ্রামগুলোর বাসিন্দারা প্রবল পানির তোড়ে ভেসে যায় তারপর কাদা ও পাথরের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে, এখনও নিখোঁজ রয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ।
ভারতের সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভি টি ম্যাথিউ জানিয়েছেন, দুর্গম জায়গার এক বাড়িতে আটকা পড়ে থাকা দুই নারী ও দুই পুরুষকে জীবিত উদ্ধার করেছেন সেনাবাহিনীর উদ্ধারকর্মীরা।
তাদের একজন আহত ছিলেন জানিয়ে ম্যাথিউ বলেন, “তারা চাপা পড়েননি, শুধু দুর্গম এলাকায় আটকা পড়েছিলেন।”
ভূমিধসের পর প্রথম দুই দিন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা মুন্ডাক্কাইকে তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযানে গতি আনা যাচ্ছিল না। এলাকাটির সঙ্গে নিকটবর্তী শহর চুরালমালাকে সংযোগকারী মূল সেতুটি ধেয়ে আসা পানির তোড়ে ভেসে যাওয়ায় মুন্ডাক্কাই পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। সেনাবাহিনীর প্রকৌশলীরা সেখানে ১৯০ ফুটের একটি সেতু পুনঃস্থাপন করতে সক্ষম হন।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সেতুটি স্থাপনের পর ভারী যানবাহন অপর পাড়ে যাওয়া শুরু করেছে। পাশাপাশি কাদার নিচে চাপা পড়ে থাকা মৃতদেহ খুঁজে বের করতে সংবেদন প্রযুক্তি সম্পন্ন ড্রোনও আনা হয়েছে।
উদ্ধারকারী দলগুলো অতিরিক্ত আরও বাহিনী মোতায়েন করেছে, তাদের মধ্যে দক্ষ সাঁতারু ও ডুবুরিরাও আছেন। তারা চলিয়ার নদী ও তীরগুলোতে মৃতদেহের খোঁজে সন্ধান চালাবেন।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টি হওয়ার ফলে ওয়েনাড়ের ওই এলাকাগুলোর মাটি নরম হয়ে গিয়েছিল, এরপর সোমবার অতি ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার পর মঙ্গলবার ভোরে ভূমিধসের ঘটনাগুলো ঘটে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিধসে পাহাড়ের পাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম, চা ও এলাচ বাগান চাপা পড়েছে আর প্রায় ৩৫০টি ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত দুই দিনে এসব এলাকা থেকে প্রায় ১৬০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: