লেবাননের ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী আট মাস ধরে গাজা যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ইসরায়েলের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি গুলিবিনিময় করে আসছে।
Published : 19 Jun 2024, 05:28 PM
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে শিগগিরই একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের সিদ্ধান্ত আসছে।
ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েল লেবাননে সর্বাত্মক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত এবং হিজবুল্লাহকে নিশানা করে আক্রমণ শানানোর পরিকল্পনাও অনুমোদন করা হয়ে গেছে।
লেবাননের ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী আট মাস ধরে গাজা যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ইসরায়েলের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি গুলিবিনিময় করে আসছে।
ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর এযাবৎকালের সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন এক কমান্ডার নিহত হওয়ার পর গত সপ্তাহে ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনাগুলোতে সবচেয়ে বড় রকেট ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে গোষ্ঠীটি।
ড্রোন ফুটেজ প্রকাশ করে ইসরায়েলের বন্দরনগরী হাইফা আক্রমণ করার হুমকিও দেন হিজবুল্লাহ নেতা সাঈদ হাসান নাসারাল্লাহ।
এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্টে কাটজ বলেছেন, “নাসারাল্লাহর হাইফা বন্দরের ক্ষতি করার হুমকির মুখে আমরা হিজবুল্লাহ ও লেবাননের বিরুদ্ধে খেলার নিয়ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার খুব কাছাকাছি চলে আসছি।”
ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “সর্বাত্মক যুদ্ধে হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করে দিয়ে লেবাননকে নাস্তানাবুদ করা হবে।”
এর জন্য অবশ্য ইসরায়েলকে ভারি মূল্য চুকাতে হবে সেকথা স্বীকার করে নিয়ে কাটজ বলেন, “আমাদের দেশ ঐক্যবদ্ধ। আর এ যুদ্ধে নিশ্চিতভাবেই উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা ফিরে আসবে।”
ওদিকে, হিজবুল্লাহ বলেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত তারা হামলা বন্ধ করবে না।
যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর চেষ্টা করছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের এক মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপকমাত্রার আঞ্চলিক যুদ্ধ দেখতে চায় না।
পরিস্থিতি ‘গুরুতর’ হওয়ায় ইসরায়েলে সংক্ষিপ্ত সফরের পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার বিশেষ দূত হোচস্টেইনকে লেবাননে পাঠান।
মঙ্গলবার হোচস্টেইন বলেন, “কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরা উত্তেজনা বাড়তে দেখেছি। উত্তেজনা আরও বেড়ে গিয়ে একটি বৃহত্তর যুদ্ধ বেধে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি এড়াতে চান প্রেসিডেন্ট বাইডেন।”
মঙ্গলবার লেবাননের সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে দেখা করেন হোচস্টেইন। সে সময় পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি।
সশস্ত্র গোষ্ঠী আমাল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাবিহ বেরি। গোষ্ঠীটি হিজবুল্লাহর সঙ্গে যোগ দিয়ে ইসরায়েলে রকেট ছুড়েছে।
লেবানন সীমান্তে এই সংঘাত আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স।