ধূমপান নিষিদ্ধের পুরোনো সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার নতুন সরকারের এই পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
Published : 27 Nov 2023, 09:14 PM
ধূমপান নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্ব জনস্বাস্থ্যে নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ে উঠে আসা নিউ জিল্যান্ডের নতুন সরকার এখন এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। কর কর্তনে রাজস্ব আয়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এমন উল্টো-মোড় নিচ্ছে দেশটি।
নিউ জিল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নতুন সরকারের এ পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। নিউ জিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওটাগোর জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক প্রফেসর রিচার্ড এডওয়ার্ড বলেছেন, “আমরা হতভম্ব, বিরক্ত। বিশ্বের নেতৃস্থানীয় একটি চমৎকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিপরীতে এ এক অবিশ্বাস্য পদক্ষেপ।”
নিউ জিল্যান্ডের বেশির ভাগ স্বাস্থ্য সংগঠনই সরকারের ঘোষণায় হতবাক হয়েছে এবং এমন সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটার আহ্বান জানাচ্ছে বলে বিবিসি-কে জানান এডওয়ার্ড।
নিউ জিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অর্ড্রুনের নেতৃত্বাধীন সরকার ধূমপান নিষিদ্ধ করতে একটি আইন প্রবর্তন করেছিল; যার আওতায় ২০০৮ সালের পরে জন্ম নেওয়া মানুষদের জন্য ২০২৪ সাল থেকে সিগারেট কেনা নিষিদ্ধ করা হয়।
নিউ জিল্যান্ডে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর প্রধান কারণ ধূমপান। ফলে নতুন প্রজন্মকে ধূমপান থেকে দূরে রাখতে তাদের সিগারেট কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। ধূমপান নিষিদ্ধের জন্য গত বছর নিউজিল্যান্ডে পাস হওয়া আইনটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিতও হয়।
এর আইনে তামাকের খুচরো বিক্রেতাদের সংখ্যা কমানো এবং সিগারেটে নিকোটিনের মাত্রা কমানোরও বিধান রাখা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এর মাধ্যমে প্রতিবছর নিউ জিল্যান্ডে পাঁচ হাজার পর্যন্ত জীবন বাঁচানো যেতে পারে।
ধূমপান নিষিদ্ধে নিউ জিল্যান্ডের এমন পদক্ষেপ যুক্তরাজ্যের সরকারকেও অনুপ্রাণিত করেছিল বলে ধারণা করা হয়। কারণ, সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যেও তরুণদের জন্য ধূমপানে একইরকম নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে এখন নিউ জিল্যান্ড তাদের ধূমপান নিষিদ্ধের পুরোনো সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দিলেও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক অবস্থান অপরিবর্তন করেননি বলেই জানিয়েছেন তার মুখপাত্র।
নিউ জিল্যান্ডে ধূমপান নিষিদ্ধের পদক্ষেপ জনস্বাস্থ্য নীতি হিসাবে প্রশংসা কুড়ালেও কয়েকটি ব্যবসায়িক সংগঠনের বিরোধিতার মুখে পড়েছে। এসব ব্যবসায়িক সংগঠনের মালিকরা ভর্তুকির ব্যবস্থা থাকার পরও সরকারের রাজস্বের ক্ষতি নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন।
তাছাড়া, নিউ জিল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী ক্রিস লুক্সন এবং আরও কয়েকজন আইনপ্রণেতাও যুক্তি দেখিয়ে বলেছিলেন, ধূমপান নিষিদ্ধ করলে তামাকের কালোবাজার গড়ে উঠতে পারে।