ড্রোনের অনুপ্রবেশ নিয়ে সিউলের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে তরুণরা সেনাবাহিনীকে যোগ দিতে পিটিশনে স্বাক্ষর করছে বলে দাবি উত্তর কোরিয়ার।
Published : 16 Oct 2024, 04:46 PM
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে প্রায় ১৪ লাখ তরুণ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার অথবা ফিরে আসার আবেদন করেছে।
ড্রোনের অনুপ্রবেশ নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে এমনটি ঘটেছে বলে বুধবার জানিয়েছে তারা। ওই ড্রোন অনুপ্রবেশের জন্য সিউলকে দায়ী করে এ ঘটনায় ‘সৃষ্ট উত্তেজনা যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে’ নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।
গত সপ্তাহে পিয়ংইয়ংয়ের আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে সেটি দিয়ে ‘বিপুল সংখ্যক’ উত্তর বিরোধী লিফলেট ছড়ানোর জন্য সিউলকে দায়ী করেছে উত্তর কোরিয়া। এর প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়া আন্তঃকোরিয়া সড়ক এবং রেললাইনের একাংশ উড়িয়ে দেয় আর সিউলকে ‘কড়া মূল দিতে হবে’ বলে হুঁশিয়ার করে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা কেসিএনএ বলেছে, “যারা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পিটিশনে স্বাক্ষর করেছে তাদের মধ্যে শিক্ষার্থী ও ইয়ুথ লীগের কর্মকর্তারাও আছেন। তারা সবাই বিপ্লবের অস্ত্র দিয়ে শত্রুকে ধ্বংস করার পবিত্র যুদ্ধে লড়তে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
কেসিএনএ কিছু ছবি প্রকাশ করেছে, সেগুলোতে তরুণরা পিটিশনে স্বাক্ষর করছে এমনটি দেখা গেছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
“যুদ্ধ শুরু হলে মানচিত্র থেকে আরওকে (রিপাবলিক অব কোরিয়া) –কে মুছে ফেলা হবে। যেহেতু তারা একটি যুদ্ধ চায়, আমরা এর অস্তিত্ব শেষ করে দিতে চাই,” বলা হয়েছে কেসিএনের প্রতিবেদনে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার সময় উত্তর কোরিয়া একই ধরনের দাবি করেছিল। তখনও তারা বলেছিল, তরুণরা সেনাবাহিনীতে নাম লেখানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
রয়টার্স বলছে, প্রায় নিঃসঙ্গ রাষ্ট্রটির এ ধরনের বিবৃতির সত্যাসত্য যাচাই করা অত্যন্ত কঠিন।
গত বছর কেসিএন জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রে বিরুদ্ধে লড়াই করতে আট লাখ নাগরিক স্বেচ্ছায় উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে চেয়েছে। ২০১৭ সালেও গণমাধ্যমটি জানিয়েছিল, ওয়ার্কার্স পার্টির ৩৫ লাখ কর্মী, পার্টি সদস্য ও সেনা স্বেচ্ছায় দেশের হয়ে লড়াই করতে চায়।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (আইআইএসএস) এর তথ্য অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়ার ১২ লাখ ৮০ হাজার সক্রিয় সেনা এবং প্রায় ছয় লাখ রিজার্ভ সেনা আছে। এর পাশাপাশি শ্রমিক/কৃষক লাল রক্ষীদের বিভিন্ন নিরস্ত্র ইউনিটগুলোর মধ্যে আরও ৫৭ লাখ অবসরপ্রাপ্ত সেনা আছে।
কেসিএনের সর্বশেষ এই প্রতিবেদনের বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করেনি, কিন্তু সতর্ক করে বলেছে, “যদি উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়ানদের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটায় তাহলে ওই দিনই হবে তাদের শাসকদের শেষ দিন।”