উত্তর প্রদেশ ও বিহার পানে দুই দলই

নতুন সরকার গঠনে ২৯টি রাজ্যবাসী ভোট দিলেও ভারতের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতারা চেয়ে আছেন উত্তর প্রদেশ ও বিহারের দিকে।

সুমন মাহমুদ নয়াদিল্লি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2014, 06:33 PM
Updated : 3 May 2014, 06:33 PM

৫৪৫ আসনের লোকসভায় একক  রাজ্য হিসেবে উত্তর প্রদেশে আসন সবচেয়ে বেশি ৮০টি। আর বিহারের আসন সংখ্যা এর ঠিক অর্ধেক হলেও এই রাজ্যের ভোট নিয়ে কোনো আভাসই স্পষ্ট হচ্ছে না।

বিজেপির সভাপতি রাজনাথ সিং গত বুধবার লক্ষ্ণৌতে ভোট দেয়ার পর সাংবাদিকদের বলেন, “উত্তর প্রদেশে বেশি আসন পাওয়ার ব্যাপারে আমাদের সর্বাধিক নজর রয়েছে। সেভাবে দল কাজ করে যাচ্ছে।”

বিজেপির অন্য নেতারা এই প্রসঙ্গে বিহারের কথাও বলেন।

উত্তর প্রদেশ কংগ্রেসের প্রবীন নেতা উমা শংকর মিসরাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“গোটা ভারতের প্রতি কংগ্রেসের নজর রয়েছে। তবে বেশি আসন হিসেবে উত্তর প্রদেশ ও বিহারের দিকে আমাদের গুরুত্ব আছেই।”

রাজধানী দিল্লির অনেক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে শোনা যায়, উত্তর প্রদেশ ও বিহার রাজ্যে ভোটের সমীকরণ ক্ষমতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

উত্তর প্রদেশ ও বিহার ছাড়া লোকসভার বেশি আসনের রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে অন্ধ্র প্রদেশ (৪২), গুজরাট (২৬), কর্নাটক (২৮), মধ্য প্রদেশ (২৯),মহারাষ্ট্র (৪৮), তামিলনাড়ু (৩৯) ও পশ্চিমবঙ্গ (৪২)।

এর অন্য রাজ্যগুলোতে ভোটের হিসাব মোটামুটি বোঝা গেলেও উত্তর প্রদেশ ও বিহারে এখনো তা বোঝা যাচ্ছে না।

উত্তর প্রদেশে ক্ষমতাসীন সমাজবাদী পার্টির অবস্থা এখন বেশি ভালো নয়। সেখানে আঞ্চলিক দল মায়াবতী নেতৃত্বাধীন বহুজন সমাজ পার্টিও শক্তিশালী।

উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌতে ভোট দেয়ার পর রাজনাথ সিং

বিহারে বিজেপির মিত্র আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যেও টানাপড়েন। নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পর নীতিশ কুমারের জনতা দল (ইউনাইটেড)বিজেপি জোট থেকে সরে গেছে। কংগ্রেসের মিত্র লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের শক্তি আগের মতো নেই।

২০০৯ সালের নির্বাচনে উত্তর প্রদেশে কংগ্রেস ২৩টি এবং বিজেপি ১২টি আসন পেয়েছিল। বিহারে কংগ্রেসে ৪টি আসন পেয়েছিল, বিজেপির আসন সংখ্যা ছিল ১৩টি।

নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সুনীল চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“উত্তর প্রদেশে যে দল বেশি আসন পাবে, তার পক্ষে অন্য দল নিয়ে কোয়ালিশন সরকার করতে সুবিধা হবে। কারণ কোনো দলের পক্ষে এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়ার সম্ভবনা কম।”

তার মতে, বিজেপিকে সরকার গঠন করতে হলে উত্তর প্রদেশে অবশ্যই কমপক্ষে ৩০-৩৫ আসন পেতে হবে।

নয়া দিল্লির পূর্ব প্রান্তে সি আর পার্কের দুই নং মার্কেটের ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ব্যবস্থাপক মনোজ বেদী বলেন,“এখন পর্যন্ত যতটুকু বোঝা যাচ্ছে- কংগ্রেস ও বিজেপি কোনো দলই এককভাবে সরকার গঠনের আসন পাবে না।

উত্তর প্রদেশের রায়বেরিলিতে প্রচারে সোনিয়া গান্ধী

“তাই উত্তর প্রদেশ ও বিহারে এই দুই দলের ভোটের ফলাফলের গুরুত্ব অনেক বেশি বলে আমরা মনে করছি।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কংগ্রেস ও  বিজেপি কেউই এককভাবে ২৭২ আসন না পেলে তৃণমূল কংগ্রেস, সমাজবাদী দল, রাষ্ট্রীয় জনতা দল, বহুজন সমাজ পার্টি, এআইডিএমকে, তেলেগুদেশম পার্টির মতো আঞ্চলিক দলগুলোই হবে সরকার গঠনের নিয়ামক শক্তি।

ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনের সাত পর্বের ভোট ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে, অষ্টম এবং নবম বা শেষ পর্বের ভোটগ্রহণ হবে যথাক্রমে ৭ মে ও ১২ মে।

এরপর ১৬ মে-ই স্পষ্ট হয়ে যাবে, কারা যাচ্ছেন ক্ষমতায়। কারণ সেদিনই জানা যাবে ভোটের ফল।

(লোকসভা নির্বাচনের খবর জানাতে ভারতে রয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিবেদক সুমন মাহমুদ)