উইকিলিকস ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল।
Published : 17 Jun 2022, 05:26 PM
যুক্তরাজ্যের ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এক মাস আগেই এক রায়ে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে প্রত্যর্পণের আনুষ্ঠানিক অনুমতি দিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিয়েছিল।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল আদালতের সেই আদেশ শুক্রবার সই করেছেন বলে জানিয়েছে তার মন্ত্রণালয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাসাঞ্জকে পাঠানো তার জন্য নিপীড়নমূলক, অন্যায় বা তার মানবাধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে বলে আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে আসেনি।”
আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে অ্যাসাঞ্জের আপিল করার সুযোগ রয়েছে। এর জন্য তার হাতে ১৪ দিন সময় আছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হলে গোপনীয় সামরিক ও কূটনৈতিক নথি ফাঁসের জন্য অ্যাসাঞ্জের বিচার করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ আটকাতে অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। কিন্তু গত মার্চে সুপ্রিম কোর্ট অ্যাসাঞ্জের ওই আবেদন বাতিল করে দেয়। তারপরই ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত এপ্রিলে সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে প্রত্যর্পণের রায় আসে।
শুনানিতে বেলমার্শ কারাগার থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে হাজিরা দিয়েছিলেন আ্যাসাঞ্জ। আদালতের ৭ মিনিটের শুনানির পর প্রধান ম্যাজিস্ট্রেট পল গোল্ডস্প্রিং অ্যাসাঞ্জকে প্রত্যর্পণের আদেশ দেন এবং মামলাটি সিদ্ধান্তের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।
এর আগে গতবছর ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যের একটি উচ্চ আদালতও অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের পক্ষে রায় দিয়েছিল। অ্যাসাঞ্জের কারাগারের অবস্থা কেমন হবে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়তা দেওয়ার পর উচ্চ আদালত ওই রায় দিয়েছিল। যে রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন অ্যাসাঞ্জ।
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
ওই সব নথির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধ সম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরো ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গুপ্তচর আইন লঙ্ঘন ও সরকারি কম্পিউটারে হ্যাকিংসহ ১৮টি অভিযোগ এনেছে। দোষ প্রমাণিত হলে উইকিলিকস ওয়েবসাইটে প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জকে কয়েক দশক কারাগারে কাটাতে হতে পারে।