তামাকের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা, বিশেষ করে তরুণদের চোখে পড়তে পারে এমন সব জায়গায় তামাকের বিজ্ঞাপনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রশ্নে ভোট আয়োজন করেছে সুইজারল্যান্ড।
Published : 13 Feb 2022, 08:14 PM
বিবিসি জানায়, রোববার এই গণভোট হবে দেশটিতে। ভোটে বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধের পক্ষে জনরায় আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে। বাস্তবে এটি হবে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা।
এছাড়া, আরও কয়েকটি বিষয়ে ভোট অনুষ্ঠান করবে দেশটি। ভোটাররা পশু পরীক্ষার উপর বিধিনিষেধ এবং গণমাধ্যমের জন্য নতুন অর্থের প্রস্তাবের বিষয়েও সিদ্ধান্ত দেবেন।
সুইজারল্যান্ডে তামাকের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধের পক্ষে যারা রয়েছেন তারা বলছেন, সরকার দেশে বিশ্বের বড় বড় তামাক কোম্পানির উপস্থিতির বিরুদ্ধে সরব নয়। ফিলিপ মরিস, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এবং জাপান টোব্যাকোর সদরদপ্তর সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত।
তামাক শিল্প সুইস অর্থনীতিতে বছরে ৬শ’ কোটির বেশি ডলারের অবদান রাখে এবং এ খাতে ১১ হাজারের বেশি মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। তবে তামাকজনিত পণ্য সেবনের কারণে দেশটিতে বছরে ৯ হাজার জন মারা যায়।
তাছাড়া, তামাকসেবন জনিত অসুস্থতার চিকিৎসা খরচও দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় একটি বড় অপচয়। এতে করে স্বাস্থ্যবীমা খরচও বেড়ে যায় এবং এর জন্য প্রত্যেককেই ব্যয় করতে হয়, তা সে ধূমপায়ী হোক বা না হোক।
ইউরোপের অধিকাংশ দেশ কয়েকবছর আগেই তামাক বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে কঠোর নিয়ম করলেও সুইজারল্যান্ডে এখনও তা ঢিলেঢালা। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স বা জার্মানিতে অনেক আগে থেকে পার্ক কিংবা রেস্তোঁরায় ধূমপান নিষিদ্ধ থাকলেও সুইসরা তা করেনি।
সুইজারল্যান্ডের সুপারশপের তরুণ বিপননকর্মীরা নিয়মিতই ক্রেতাদের কাছে গিয়ে নতুন সিগারেট ব্র্যান্ডের ফ্রি নমুনাও দিয়েছে। তবে সেসব এখন নিষিদ্ধ হয়ে গেলেও তামাকের বিজ্ঞাপন রয়ে গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তামাক নিয়ন্ত্রণের ঐতিহাসিক ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন নিয়ে প্রায় ২০ বছর আগে জেনেভায় আলোচনা হয়েছিল। সুইজারল্যান্ড এতে স্বাক্ষর করেছে, কিন্তু এখনও অনুমোদন করেনি। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বিজ্ঞাপনের বিষয়ে দেশটির আইন উপযোগী নয়।
ইউরোপের বেশিরভাগ দেশের চেয়ে সুইজারল্যান্ডে সিগারেট সস্তা এবং ২৭ শতাংশ সুইস ধূমপান করে। এ হার ইউরোপীয় অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক বেশি।
কঠোর বিধিনিষেধ চালুর জন্য বারবার আইন করার চেষ্টা সুইস পার্লামেন্টে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এমনকী তামাক নিষেধাজ্ঞার দাবিতে যারা প্রচার চালিয়েছে তারা এর পক্ষে যথেষ্ট স্বাক্ষর সংগ্রহ করার পরও সুইস সরকার ‘না’ ভোটের সুপারিশ করেছে।
তামাকের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধের বিপক্ষে যারা রয়েছে তারা বলছে, বৈধ জিনিসের বিজ্ঞাপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা মেনে নেওয়া যায় না। আর তামাকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে চিনি ও অ্যালকোহলের মতো স্বাস্থ্যহানিকর জিনিসের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।
‘নিষেধাজ্ঞা নয়’ প্রচারকারীদের পোস্টারে সতর্কবার্র্তা দিয়ে বলা হচ্ছে, “আজ তামাক, কাল সসেজ নিষিদ্ধ হবে?” আর নিষেধাজ্ঞার পক্ষের প্রচারকারীদের পোস্টারে বলা হচ্ছে, তামাকের বিজ্ঞাপনের কারণেই বহু শিশু ধূমপান করছে।