আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ জাতিসংঘ দূত ডেবোরাহ লায়ন্স বলেছেন, আফগানিস্তানে যুদ্ধ ‘প্রাণঘাতী এবং আরও ধ্বংসাত্মক পর্যায়ে’ চলে গেছে। তালেবানের হামলায় গত মাসে প্রাণ হারিয়েছে ১ হাজারের বেশি মানুষ।
Published : 06 Aug 2021, 11:51 PM
শুক্রবার লায়ন্স জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে একথা জানিয়েছেন। আফগানিস্তান সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের ব্যাপারে তালেবানের প্রতিশ্রুতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে লায়ন্স বলেন, “কোনও পক্ষ সত্যিই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলে এত মানুষ হতাহত হওয়ার ঝুঁকি নিত না। কারণ তারা বুঝত যে, রক্তক্ষয় যত বেশি হবে, সম্প্রীতি গড়ে তোলার প্রক্রিয়াটাও ততবেশি চ্যালেঞ্জিং হবে।”
আফগানিস্তানে দীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো জোট সেনা প্রত্যাহার শুরুর পর থেকেই দেশটিতে সহিংসতা বেড়েছে। আফগান বাহিনীর হাত থেকে একের পর এক জেলা দখলে নিয়েছে তালেবান।
নিরাপত্তা পরিস্থিতির এই অবনতির মধ্যে শুক্রবার তালেবান জঙ্গিরা আফগান সরকারের মিডিয়া ও তথ্য কেন্দ্রের পরিচালককে খুন এবং প্রথমবারের মতো কোনও প্রাদেশিক রাজধানী দখল করে প্রশাসনকে বেকায়দায় ফেলেছে।
“আফগানিস্তানে এই লড়াই এখন এক ভিন্ন ধরনের যুদ্ধ, যা সম্প্রতিক সময়ের সিরিয়া বা কিছুকাল আগের সারায়েভো যুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেয়”, বলেন জাতিসংঘ দূত লায়ন্স।
তিনি বলেন, “শহর এলাকাগুলোতে হামলা চালানো মানে জেনেশুনেই সাধারণ মানুষের বিরাট ক্ষতি করা এবং বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটানো। তারপরও দৃশ্যত শহর এলাকাগুলোকে হুমকির মুখে রাখার কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে তালেবান।”
আফগানিস্তানের সরকার এবং তালেবানের মধ্যে শান্তি আলোচনা গতবছর কাতারের রাজধানী দোহায় শুরু হলেও তেমন কোনও অগ্রগতি হয়নি।
জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, আফগানিস্তান পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ বাড়ছে। আর বিদেশি বাহিনী দেশটি ছেড়ে চলে যাওয়ায় ভবিষ্যৎ নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, “আফগান পরিস্থিতির কোনও সামরিক সমাধান নেই তা পরিষ্কার, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে - আলোচনা প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি থমকে থাকায়- আফগানিস্তান পুরোদস্তুর গৃহযুদ্ধের পথেই আগাচ্ছে, এটিই এখন বাস্তবতা।”
ঊর্ধ্বতন মার্কিন কূটনীতিক জেফরি তালেবানকে হামলা বন্ধ করে রাজনৈতিক সমাধানের পথে এসে আফগানিস্তানের অবকাঠামো এবং জনগণকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।